ঈদুল আজহার কথা বলে চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় চারটি পথে অটোরিকশায় যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। কয়েক দিন ধরে অটোরিকশার চালকেরা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন। এতে যাত্রীরা বিপাকে পড়েছেন। বেশি ভাড়া না দিলে অটোরিকশার চালকেরা তাঁদের হয়রানি করেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
কয়েকজন অটোরিকশার চালক ও যাত্রী এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঈদ সামনে রেখে তিন-চার দিন ধরে অটোরিকশায় যাত্রীদের কাছ থেকে মতলব-চাঁদপুর পথে ৫০ টাকার জায়গায় ৬০-৭০, মতলব-বাবুরহাট পথে ৪০ টাকার জায়গায় ৫০-৬০, মতলব-নারায়ণপুর পথে ৫০ টাকার জায়গায় ৭০ এবং মতলব-নায়েরগাঁও পথে ৬০ টাকার জায়গায় ৮০ টাকা ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। অটোরিকশার চালকেরা ওই বাড়তি ভাড়ার নাম দিয়েছেন ‘বিশেষ ঈদভাড়া’।
উপজেলার কলাদী এলাকার সোহরাব হোসেন অভিযোগ করেন, গতকাল বুধবার রাতে তিনি কুমিল্লার লাকসাম থেকে চাঁদপুর হয়ে মতলব দক্ষিণে আসেন। চাঁদপুর থেকে সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশায় উপজেলা সদরে আসতে তাঁর কাছ থেকে ৭০ টাকা ভাড়া আদায় করা হয়। এ পথে স্বাভাবিক সময়ে জনপ্রতি ভাড়া ৫০ টাকা। ওই বাড়তি ভাড়া দিতে না চাইলে অটোরিকশাটির চালক তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও তাঁকে হয়রানি করেন। এ নিয়ে কথা-কাটাকাটিও হয়। পরে মানসম্মানের ভয়ে আর কথা না বাড়িয়ে চালকের চাহিদামতো বেশি ভাড়া দিয়েই আসতে হয়।
উপজেলার নায়েরগাঁও এলাকার মো. শিপন মিয়া অভিযোগ করেন, তিনি চাঁদপুর জেলা শহরে কাজ করেন। আসন্ন ঈদ উপলক্ষে বাড়ি যাওয়ার জন্য বৃহস্পতিবার সকালে চাঁদপুর থেকে একটি অটোরিকশায় উপজেলা সদরে আসেন। পরে উপজেলা সদর থেকে আরেকটি অটোরিকশায় নায়েরগাঁও যান। চাঁদপুর সদর থেকে উপজেলা সদরে আসতে তাঁর কাছ থেকে ৭০ এবং উপজেলা সদর থেকে নায়েরগাঁও যেতে তাঁর কাছ থেকে ৮০ টাকা ভাড়া আদায় করেন চালকেরা। এ নিয়ে ওই দুই চালকের সঙ্গে তাঁর ধস্তাধস্তিও হয়। শেষ পর্যন্ত অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েই তাঁকে অটোরিকশা থেকে নামতে হয়েছে। বিষয়টি তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন।
অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে মতলব-চাঁদপুর পথের অটোরিকশাচালক মঙ্গল মিয়া বলেন, ‘সামনে ঈদ। এলিগা কিছু ভাড়া বেশি নেই। এটা হচ্ছে “বিশেষ ঈদভাড়া”। ঈদের বকশিশ হিসেবেও ওই ভাড়া কোনো কোনো যাত্রী আমাগো দিয়ে থাকেন। অতিরিক্ত ভাড়া না দিলে কিছুটা তর্কবিতর্ক অইতেই পারে। তবে জোরপূর্বক ভাড়া আদায় করা বা যাত্রীদের হয়রানি করার অভিযোগ সত্য নয়।’
এ বিষয়ে উপজেলা অটোরিকশাচালক সমিতির সভাপতি আবদুর রহিম খান বলেন, যাত্রীদের কাছ থেকে নির্ধারিত ভাড়া আদায়ের জন্যই চালকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরপরও যদি কোনো চালক ঈদ উপলক্ষে চাপ দিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেন তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মতলব দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স্বপন কুমার আইচ বলেন, ঈদ উপলক্ষে অটোরিকশায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের লিখিত অভিযোগ তিনি পাননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন।