যৌতুক চেয়ে নির্যাতন এবং ভ্রুন হত্যার অভিযোগে দৈনিক সমকালের সাংবাদিক সাজিদা ইসলাম (পারুল) দৈনিক যুগান্তরের সাংবাদিক রেজাউল করিমের (প্লাবন) বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
আজ সোমবার রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় তিনি মামলাটি করেন। সাজিদা ইসলাম জানিয়েছেন, গত ২ এপ্রিল তাঁরা বিয়ে করেন। তবে রেজাউল করিম বিয়ের কথা গোপন রাখতে বলেন। বিয়ের পর সাজিদা বুঝতে পারেন তাঁর স্বামী তাঁর আগের বিয়েসহ বিভিন্ন বিষয় গোপন করেছেন। এরপর সাজিদা যখন জানান, তিনি সন্তানের মা হতে যাচ্ছেন তখন ভ্রুণ হত্যার জন্যও চেষ্টা চালাতে থাকেন। যৌতুক দাবি করেও নির্যাতন চালান। তবে সামাজিক মর্যাদা এবং পেটের সন্তানের কথা চিন্তা করে সব নির্যাতন সহ্য করতে থাকেন। এক পর্যায়ে স্বামী ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের কারণে ভ্রুন নষ্ট হয়ে যায়।
সাজিদা ইসলাম টেলিফোনে প্রথম আলোকে মামলা করেছেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন,' আমার পেটে যতদিন সন্তানের অস্তিত্ব ছিল ততদিন আমি চেষ্টা করেছি আমার সংসারটা টিকিয়ে রাখার। আমি এখন সন্তান হারা। আমি যে চরম নির্যাতনের শিকার হয়েছি তার সুষ্ঠু বিচার চাই।'
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে রেজাউল করিমের মুঠোফোনে কয়েকবার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি, বার বার ফোনের লাইন কেটে দিয়েছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, তাঁদের বিয়ের এক মাসের মাথায় স্বামী রেজাউল করিম মায়ের অসুস্থতার কথা বলে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি চিলমারীতে যান। এ সময় সাজিদা ইসলাম সঙ্গে যেতে চাইলে মারধর করেন রেজাউল। সাজিদার পেটেও আঘাত করেন।
সাজিদা ইসলাম জানান, হোয়াটসঅ্যাপে রেজাউল করিম একটি তালাকনামা পাঠান। এরপর গত ৫ মে বিকেলে কুড়িগ্রামের চিলমারীতে শ্বশুর বাড়ি পৌঁছান সাজিদা। এ সময়ও তিনি শ্বশুরবাড়িতে ঢুকতে পারেননি এবং রেজাউল করিমের পরিবারের সদস্যরা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন এবং প্রকাশ্যেই যৌতুক দাবি করেন। পরে স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিক সাজিদাকে উদ্ধার করে চিলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয় তাঁকে। নির্যাতনের কারণে ভ্রুণটি নষ্ট হয়ে যায়।
রেজাউল করিম ঢাকায় বসবাস করেন হাতিরঝিল থানাধীন মীরবাগে। রেজাউল করিমকে প্রধান আসামি করে পাঁচ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়েছে।