ভারতে এক বাংলাদেশি তরুণীকে যৌন নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার ঘটনার জের ধরে বাংলাদেশে নারী পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
গতকাল সোমবার রাত থেকে আজ মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ঝিনাইদহ, যশোর ও বেনাপোলে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে দুজনের পরিচয় প্রকাশ করা হয়েছে। একজন হলেন টিকটক ভিডিও বাংলাদেশ চক্রের প্রধান আশরাফুল মণ্ডল ওরফে রাফি ও তাঁর সহযোগী শাহিদা বেগম।
র্যাবের গোয়েন্দা শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খায়রুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার রাফি ‘টিকটক হৃদয়ের’ বস। এ বিষয়ে আজ বিকেল পাঁচটায় কারওয়ান বাজারে র্যাবের ব্রিফিং সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে।
বাংলাদেশি তরুণীকে যৌন নির্যাতনের ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর গত বৃহস্পতিবার দুই নারীসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে বেঙ্গালুরু পুলিশ। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে একজনের পরিচয় নিশ্চিত হয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ। তাঁর নাম রিফাদুল ইসলাম হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয় (২৬)।
রিফাদুল ইসলাম ঢাকার মগবাজার এলাকার বাসিন্দা। নির্যাতনের শিকার তরুণীটিও ঢাকার এই এলাকার বাসিন্দা। রিফাদুলই তাঁকে মধ্যপ্রাচ্যে পাঠানোর কথা বলে বছরখানেক আগে ভারতে নিয়ে যান বলে তাঁর পরিবার জানিয়েছে।
পুলিশ আগে প্রথম আলোকে জানিয়েছিল, রিফাদুল টিকটক ভিডিও বানানোর ফাঁদে ফেলে আরও কয়েকজন তরুণীকে ভারতে পাচার করেছেন বলে তারা তথ্য পেয়েছে। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করা রিফাদুল ঢাকার উত্তরা, খিলগাঁও ও হাতিরঝিলে মেয়েদের নিয়ে টিকটক ভিডিও তৈরি করতেন। বাসার কাছের হাতিরঝিলেই ভিডিও বানাতেন বেশি। এভাবে মেয়েদের ফাঁদে ফেলে মানব পাচারকারী চক্রের যোগসাজশে ভারতে পাচার করতেন। প্রাথমিকভাবে ঢাকার কয়েকজন তরুণীকে ভারতে পাচার করার তথ্য পেয়েছে পুলিশ।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে হাতিরঝিল থানায় হৃদয়সহ পাঁচজনকে আসামি করে মানব পাচার ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করেছেন তরুণীটির বাবা। তিনি মামলায় বলেছেন, তাঁর মেয়েকে মধ্যপ্রাচ্যে পাঠানোর কথা বলে ভারতে নিয়ে যান হৃদয়।