ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের শেয়ারহোল্ডার এনামুল হক ক্লাব থেকে পাওয়া টাকা বাসায় এনে রাখতেন। সূত্রাপুরের বানিয়ানগরের নিজ বাড়িতে তিনি টাকা রাখার জন্য ভল্ট বানিয়েছেন। তবে সেখানেও টাকা রাখার জায়গা হতো না। তাই টাকা দিয়ে স্বর্ণালংকার কিনতেন। এনামুল হক স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা। র্যাব তাঁর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ১ কোটি ৫ লাখ টাকা ও ৭২০ ভরি স্বর্ণালংকার উদ্ধার করে।
গতকাল সোমবার মধ্যরাত থেকে র্যাব-৩ এনামুলের বাসায় অভিযান চালায়। আজ মঙ্গলবার দুপুরে অভিযান শেষে র্যাব-৩–এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সফিউল্লাহ বুলবুল সাংবাদিকদের বলেন, সূত্রাপুরের বানিয়ানগরে এনামুলের ছয়তলায় বাসার দোতলা ও পাঁচতলা থেকে তিনটি ভল্ট পেয়েছেন। এ ছাড়া ইংলিশ রোডে আরও পাঁচটি ভল্ট ভাড়া নিয়েছেন টাকা রাখার জন্য।
অভিযানের সময় একজন ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে ভল্ট খোলা হয়। সেখান থেকে তাঁরা ১ কোটি ৫ লাখ টাকা ও ৭২০ ভরি স্বর্ণালংকার উদ্ধার করেছেন। এ ছাড়া ৫টি আগ্নেয়াস্ত্রও উদ্ধার করে র্যাব। স্থানীয় লোকজন জানান, এসব অস্ত্র দিয়ে মানুষকে ভয়ভীতি দেখাতেন এনামুল ও তাঁর ভাই রূপণ ভূঁইয়া।
র্যাব জানায়, এনামুলদের ১৫টি বাসা রয়েছে রাজধানীতে। ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের অন্যতম শেয়ারহোল্ডার এনামুল ক্লাব থেকে টাকা এনে বাসায় রাখতেন। কিন্তু বিপুল পরিমাণ টাকা রাখার জায়গাও হতো না। তাই টাকা দিয়ে তিনি স্বর্ণালংকার কিনতেন। এনামুল হক এক সপ্তাহ আগে থাইল্যান্ড চলে গেছেন এবং তাঁর ভাই রূপণ ভূঁইয়া পলাতক। র্যাব তাঁকে খুঁজছে। র্যাব আরও জানায়, নারিন্দার একটি বাসায় এনামুলের আরও একটি ভল্টের সন্ধান পাওয়া গেছে। সেখানে তারা এখন অভিযান চালাবে।
ক্যাসিনো ও অবৈধ জুয়ার বিরুদ্ধে চলমান অভিযানের অংশ হিসেবে সূত্রাপুরের বানিয়ানগরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই নেতা এনামুল হক ও রূপণ ভূঁইয়ার বাসায় র্যাব–৩ এ অভিযান চালিয়েছে।
ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘এনামুল হক ও রূপণ ভূঁইয়া গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের দুই নেতা।’
গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লিয়াকত জাহান প্রথম আলোকে বলেন, ‘এনামুল হক থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আর রূপণ ভূঁইয়া যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে আছেন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আমরা এ দুজনের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।’
র্যাব-৩–এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সফিউল্লাহ বুলবুল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ সকাল ১০টায় এনামুল হক ও রূপণ ভূঁইয়ার বাসায় অভিযান চালানো হয়। কিন্তু তাঁরা দুজনই পালিয়ে গেছেন। তাঁদের রাজনৈতিক পরিচয় সম্পর্কে জানি না, তবে তাঁরা নিজেদের নামে বেশ কিছু পোস্টার টানিয়েছে।’
র্যাব সূত্রে জানা গেছে, এনামুল হক ও রূপণ ভূঁইয়া ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের শেয়ারহোল্ডার।