শিক্ষকদের বেতের বাড়ি সইতে না পেরে মধ্য রাতে মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে গেল চার শিক্ষার্থী। চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বটতলী রুস্তমহাটে গতকাল রোববার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই চার শিক্ষার্থী ‘দারুল তাকওয়া লি-তাহফীজিল কুরআনিল কারীম’ নামের একটি মাদ্রাসার ছাত্র। গতকাল রাত ১০টার দিকে সেখানকার ছাত্রাবাস থেকে পালিয়ে যায় তারা। চারজন পারকি এলাকার দিকে চলে গেলে রাত দেড়টার দিকে স্থানীয় লোকজন তাদের থামায়। তাদের অভিভাবকদের খবর দেওয়া হয়। তখন এই শিক্ষার্থীরা জানায়, শিক্ষকদের বেতের আঘাত সইতে না পেরে তারা পালিয়েছে।
পালিয়ে যাওয়া চার শিক্ষার্থী হলো আনোয়ারা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের পরুয়াপাড়ার মোহাম্মদ ফয়সাল, বারশত ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের জাগির পাড়ার মোহাম্মদ, একই ইউনিয়নের গোবাদিয়ার মোহাম্মদ এহেছান ও বাঁশখালীর সাধনপুর ইউনিয়নের বাণী গ্রামের মোহাম্মদ মিজান। সবার বয়স ১০ থেকে ১২ বছরের মধ্যে।
মাদ্রাসা সূত্র জানায়, রুস্তমহাটের একটি মার্কেটের দোতলায় অবস্থিত মাদ্রাসাটি পাঁচ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত হয়। ওই মাদ্রাসায় শুধু পবিত্র কোরআন শেখানো হয়। সেখানে প্রায় ২০০ শিক্ষার্থীকে পড়ান আটজন শিক্ষক। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা বেতন আদায় করা হয়।
পালিয়ে যাওয়া চার শিক্ষার্থীর একজন মোহাম্মদ ফয়সাল জানায়, ‘হুজুরেরা খুব মারে। মা-বাবাকে জানালে তাঁরাও মারে, তাই চলে এসেছি।’
পারকি এলাকার বাসিন্দা সোহেল শাহ বলেন, ‘পালিয়ে আসা ছাত্রদের রাতেই অভিভাবকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।’
বারশত ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এম এ কাইয়ুম শাহ বলেন, এলাকার লোকজন ও গ্রাম-পুলিশের সহায়তায় ওই চার শিক্ষার্থীকে অভিভাবকের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এভাবে শিক্ষার্থীদের মারধর করা উচিত হয়নি।
তবে মাদ্রাসার পরিচালক হাফেজ মোহাম্মদ মহিউদ্দিনের ভাষ্য, মাদ্রাসায় পড়ার চাপ সইতে না পেরে চার ছাত্র পালিয়ে যায়। বেশি মারধর করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি মন্তব্য করেননি।
আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুলাল মাহমুদ বলেন, ‘আমরা খোঁজখবর নিয়ে বিষয়টি দেখব।’