মাদারীপুরে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। তাঁর নাম মোয়াজ্জেম মোল্লা (৫২)। গতকাল শনিবার রাত নয়টার দিকে সদর উপজেলার ঝাউদি ইউনিয়নের নৌকাঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ বলছে, নিহত মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে মাদারীপুর সদর থানায় হত্যা, নারী নির্যাতনসহ সাতটি মামলা রয়েছে। তিনি ঝাউদি ইউনিয়নের চরকুলপদী এলাকার বাসিন্দা। তিনি সদর উপজেলা ভূমি অফিসের নাজির পদে কর্মরত ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা থাকায় তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গতকাল রাত আটটার দিকে সদর উপজেলার কুলপদী এলাকায় একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন মোয়াজ্জেম। সেখান থেকে মোটরসাইকেলে করে বাড়িতে ফেরার সময় নৌকাঘাট এলাকার ব্রিজটি পার হলে তাঁর গতিরোধ করে দুর্বৃত্তরা। পর দুর্বৃত্তরা তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে। তাঁর চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে এলে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। তাঁকে গুরুতর অবস্থায় প্রথমে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাঁর অবস্থা অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেন। সেখানে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। এ ঘটনা পর থেকেই ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
নিহত মোয়াজ্জেমের স্ত্রী ফাহিমা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী ওদের কী দোষ করছে? কেন তাঁকে পশুর মত কুপিয়ে মেরে ফেলল? হাতে, পায়ে, এমনকি পেটে কোনো জায়গা বাদ নেই, যেখানে তাকে না কোপাইছে। আল্লাহ, তুমি আমার স্বামী হত্যা বিচার করো।’
ফাহিমার দাবি, গ্রামের দলাদলির কারণেই তাঁর স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে। এর পেছনে জেলা পরিষদের সদস্য নান্নু মাতুব্বর, ঝাউদি ইউনিয়নের সোবাহান সরদার, কামরুল সরদার, হালিম মোল্লা, কালু সরদার, পলাশ সরদারসহ বেশ কয়েকজন জড়িত আছেন।
নিহত ব্যক্তির স্বজনেরা জানান, মাদারীপুর জেলা পরিষদের সদস্য নান্নু মাতুব্বরের সঙ্গে মোয়াজ্জেম মোল্লার আধিপত্য নিয়ে বিরোধ ছিল। সেই বিরোধের জের ধরে দুই পক্ষের একাধিকবার সংঘর্ষ হয়। এই জের ধরেই তাঁকে হত্যা করা হয়েছে।
অভিযোগ সম্পর্কে নান্নু মাতুব্বর প্রথম আলোকে বলেন, ‘মোয়াজ্জেম আমার আত্মীয় হয়। তার সঙ্গে আমার আবার কিসের বিরোধ? তার সঙ্গে কখনোই আমার কোনো বিরোধ ছিল না। স্থানীয় ভাবে শুনেছি, মোয়াজ্জেমের সঙ্গে এক মেয়েরে অবৈধ সম্পর্ক ছিল। হয়তো এই হত্যাকাণ্ডের পিছনে তারই হাত আছে।’
মাদারীপুর সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সিরাজুল হক সরদার বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, ঝাউদি এলাকার সোবাহান সরদারের সঙ্গে নিহত ব্যক্তির আধিপত্য নিয়ে বিরোধ ছিল। সেই কারণেই তাঁকে হত্যা করা হতে পারে। এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির পরিবার কোনো মামলা করেনি। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিকেলে রাখা হয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।