বিদেশে পাঠানোর কথা বলে ২১ লাখ টাকা নিয়ে উধাও

নিউজিল্যান্ডে চাকরি দেওয়ার নাম করে ৮ যুবকের ২১ লাখ টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছে একটি জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে মামলা করা হলেও পুলিশ বেশির ভাগ আসামিকে খুঁজে পাচ্ছে না।
প্রতারণার শিকার এক যুবক মীর মোস্তাক আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, বিদেশে পাঠানোর নামে কারওয়ান বাজার এলাকায় কোয়েস্ট ইমিগ্রেশন অ্যান্ড এডুকেশন কনসালট্যান্সি নামের একটি প্রতিষ্ঠান প্রতারণা করেছে। তাঁদের প্রত্যেকের পাসপোর্ট ও শিক্ষাগত সনদও আটকে রাখা হয়েছে।
প্রতারণার শিকার অন্য যুবকেরা প্রত্যেকেই মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর উপজেলার বাসিন্দা। তাঁদের কেউ জমানো টাকা দিয়ে, কেউ জমি বন্ধক রেখে ঋণ নিয়ে ওই প্রতিষ্ঠানকে টাকা দিয়েছিলেন। গত বছর অনলাইনে একটি ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন দেখে তাঁরা ওই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন।
ওই প্রতিষ্ঠান থেকে তাঁদের বলা হয়, জনপ্রতি ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকা দিলে নিউজিল্যান্ডে রংমিস্ত্রি, ইলেকট্রিশিয়ান ও কাঠমিস্ত্রির চাকরির ব্যবস্থা করা হবে। শুরুতে অগ্রিম ১০ হাজার টাকা নেওয়া হয়। পরে বলা হয়, বিভিন্ন পদে চাকরির জন্য তাঁরা নিউজিল্যান্ডের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে মনোনীত হয়েছেন। বছরে বেতন ২৭ হাজার থেকে শুরু করে ৩৬ হাজার নিউজিল্যান্ড ডলার। এরপর সাজানো স্কাইপির মাধ্যমে এবং কারওয়ান বাজারের অফিসে এনে সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়।
গত বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যুবকেরা ওই প্রতিষ্ঠানটিকে ছয় দফায় ২১ লাখ টাকা দেন। এরপর থেকেই প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী শাহেদুল হক, পরিচালক দীন ইসলাম পাটোয়ারী, কর্মচারী পল্লল হোসেন ভূঁইয়া সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। পরে পল্লল হোসেন যুবকদের বিদেশে পাঠাতে পারবেন না বলে মুঠোফোনে জানিয়ে দেন।
মামলার প্রধান অভিযুক্ত শাহেদুল হকের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি প্রথমে নিজের পরিচয় দেন। পরে তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে ‘এটা আমার ছোট ভাইয়ের নম্বর’ বলে কেটে দেন।
তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক মিরাজ আল মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা প্রমাণ পেয়েছি, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা ২১ লাখ টাকা নিয়েছে। ব্যাংকের মাধ্যমে যে লেনদেনগুলো হয়েছে, তার প্রমাণ পাওয়া গেছে।’
গত ২৩ অক্টোবর প্রতিষ্ঠানটির কারওয়ান বাজারের ঠিকানায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে এখন আর তাদের অফিস নেই।