ঈদুল আজহা উপলক্ষে পঞ্চগড় সদর উপজেলার অমরখানা ইউনিয়ন পরিষদের জন্য বরাদ্দ ভিজিএফের চাল না পেয়ে বিক্ষোভ করেন বঞ্চিতরা। তাঁদের বিক্ষোভের মুখে চাল কিনে দিতে বাধ্য হয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান মো. নুরুজ্জামান। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।
অসাবধানতাবশত বরাদ্দের চেয়ে অতিরিক্ত ১২২ জনের মাঝে টোকেন বিতরণ করায় এমন ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেন ইউপি চেয়ারম্যান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত সোমবার অমরখানা ইউনিয়নের দরিদ্র মানুষের মাঝে ভিজিএফের চাল বিতরণ শুরু হয়। বরাদ্দ পাওয়া ৪৪ মেট্রিক টন চাল ৪ হাজার ৪০৩ জনের মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছিল। আগে থেকেই তালিকাভুক্তদের হাতে ভিজিএফের টোকেন বিতরণ করেন ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা। মঙ্গলবার বিকেলে বিতরণের শেষ দিকে ১২২ জন টোকেন থাকা সত্ত্বেও চাল শেষ হয়ে যায়। এ সময় বঞ্চিতরা দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পরও চাল না পেয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। খবর পেয়ে ইউএনও ছুটে আসেন। অবস্থা বেগতিক দেখে ইউএনওর উপস্থিতিতে অমরখানা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. নুরুজ্জামান তাৎক্ষণিকভাবে নিজের টাকায় বাজার থেকে চাল কিনে বঞ্চিত ১২২ জনের মাঝে ১০ কেজি করে বিতরণ করেন।
ইউপি চেয়ারম্যান নুরুজ্জামানের দাবি, তিনি ইউপি সদস্যদের মোট ৪ হাজার ৪০৩ জনকে টোকেন দিতে বলেছেন। এর মধ্যেই ইউনিয়নের ৬১টি মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিনকে অন্তর্ভুক্ত করতে বলেছিলেন। কিন্তু ইউপি সদস্যরা ৪ হাজার ৪০৩ জনকে টোকেন দেওয়ার বাইরে ১২২ জন ইমাম ও মুয়াজ্জিনকে ভিজিএফের টোকেন দিয়েছেন। বিষয়টি তাঁর জানা ছিল না।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আরিফ হোসেন বলেন, অমরখানায় ইউনিয়নে যে পরিমাণ ভিজিএফের চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তার চেয়ে ১২২ জনকে অতিরিক্ত টোকেন দেওয়া হয়েছিল। এ কারণে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। তবে ইউপি চেয়ারম্যান নিজে চাল কিনে অতিরিক্ত ১২২ জনের মাঝে চাল বিতরণ করেছেন। এরপরও কেউ বাদ পড়লে চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
ইউএনও আরও বলেন, ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফজলুল হকের বিরুদ্ধে একটি ওষুধের দোকানের সিলযুক্ত ভুয়া টোকেন তৈরি করে বিতরণের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে এবং প্রয়োজনে তাঁর বিরুদ্ধে স্থানীয় সরকার আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তবে ইউপি সদস্য ফজলুল হক বলেন, বিতরণের আগে চেয়ারম্যান তাঁর লোকজন দিয়ে কিছু চাল সরিয়ে ফেলেছেন, যা অনেকেই দেখেছেন। এ কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তিনি কোনো ভুয়া টোকেন তৈরি করেননি। তার ওয়ার্ডের মানুষদের চিহ্নিত করার জন্য তিনি তার বড় ছেলের ওষুধের দোকানের সিল ব্যবহার করেছেন। এখনো তার ওয়ার্ডের ১৫৫ জন স্লিপধারী মানুষ চাল পাননি। আজ বুধবার তাদের চাল দেওয়ার কথা দিয়েছেন চেয়ারম্যান।