টাঙ্গাইলে এক বাসচালকের বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধী এক নারী যাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার করা চালকের সহকারী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আদালত আজ শনিবার ধর্ষণের শিকার হওয়া ওই নারীকে সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে টাঙ্গাইলের বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব প্রান্তের বাসস্ট্যান্ডে এ ঘটনা ঘটে।
বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নুরে আলম বলেন, বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব প্রান্তে পুলিশের টহলরত সদস্যরা ওই এলাকার নৈশপ্রহরীর কাছে এ ঘটনা জানতে পারেন। পুলিশ বাসটি থেকে এক নারীকে উদ্ধার করে। ওই নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। পরে পুলিশ ওই বাসের চালকের সহকারী নাজমুলকে (২৫) আটক করে।
গতকাল শুক্রবার এসআই নুরে আলম বাদী হয়ে বাসের চালক আলম খন্দকার (৪৫) ও চালকের সহকারী নাজমুলকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন।
মামলায় চালক আলম খন্দকারের বিরুদ্ধে ওই নারীকে ধর্ষণ ও সহকারী নাজমুলের বিরুদ্ধে ধর্ষণে সহায়তা করার অভিযোগ আনা হয়েছে। আলম খন্দকার ভূঞাপুর উপজেলার ভূঞাপুর গ্রামের মৃত ইন্নছ আলীর ছেলে। নাজমুল একই উপজেলার যমুনা ৩ নম্বর পুনর্বাসন এলাকার আতোয়ার রহমানের ছেলে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় নাজমুলকে ওই মামলায় টাঙ্গাইল বিচারিক হাকিম আদালতে পাঠানো হয়। এ সময় তিনি ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আদালতে জবানবন্দি দেন। জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. আশিকুজ্জামান জবানবন্দি লিপিবদ্ধ শেষে নাজমুলকে জেলে পাঠানোর আদেশ দেন।
আদালত ও পুলিশ সূত্র জানায়, জবানবন্দিতে নাজমুল বলেন, বৃহস্পতিবার রাত ১০টার পর ওই নারী টাঙ্গাইল নতুন বাস টার্মিনাল থেকে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব প্রান্তগামী বাসটিতে (যশোর-ব-৪৪২) ওঠেন। বিভিন্ন স্থানে অন্য সব যাত্রীরা নেমে যায়। সেতুর পূর্ব প্রান্তের বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছার পর ওই নারীকে একা পেয়ে চালক আলম খন্দকার ধর্ষণ করেন। এ সময় নাজমুল বাসের দরজায় দাঁড়িয়ে থেকে পাহারা দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থানার এসআই কবিরুল হক জানান, ওই নারী মানসিক প্রতিবন্ধী। তিনি শুধু নিজের নাম ও জেলার নাম বলতে পারেন। শনিবার তাঁকে টাঙ্গাইল বিচারিক হাকিম আদালতে হাজির করে সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানোর আবেদন করা হয়। আদালত তাঁকে গাজীপুরের পুবাইলে সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে গত বছরের ২৫ আগস্ট বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে রূপা খাতুনকে চলন্ত বাসে পরিবহনশ্রমিকেরা ধর্ষণ করেন। পরে তাঁকে হত্যা করে টাঙ্গাইলের মধুপুর বন এলাকায় ফেলে রেখে যান। পুলিশ ওই রাতেই তাঁর লাশ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্ত শেষে পরদিন বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় অরণখোলা পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে মধুপুর থানায় মামলা করেন। টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে রূপা খাতুনকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায়ে আদালত গত ১২ ফেব্রুয়ারি চার আসামির মৃত্যুদণ্ড ও একজনের সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন।