সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যার ঘটনায় তাঁর (বাবুল) করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। আজ বুধবার বেলা একটার দিকে চট্টগ্রাম আদালতে এটি জমা দেওয়া হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) কাজী শাহাবউদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, হত্যা মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে পিবিআই। এটি আদালতে গ্রহণের শুনানির জন্য রয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রামের পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, স্ত্রী হত্যায় বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় এই মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। কারণ, বাবুল মামলার বাদী।
এদিকে বাবুলকে আসামি করে পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা করা হচ্ছে।
পাঁচ বছর আগে চট্টগ্রামে নিজ বাসার কাছে খুন হয়েছিলেন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু। সেই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাবুল আক্তারকে হেফাজতে নিয়েছে পিবিআই।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সোমবার থেকে বাবুল আক্তার চট্টগ্রামের পিবিআইয়ে হেফাজতে আছেন। তবে পিবিআই বাবুল আক্তারকে আটক বা গ্রেপ্তারের কথা স্বীকার করেনি। তারা বলছে, বাবুলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চট্টগ্রামে ডেকে পাঠানো হয়েছে।
মাহমুদা হত্যার ঘটনায় করা মামলার বাদী স্বামী বাবুল আক্তার। কিন্তু পরবর্তীকালে বাবুল আক্তারকে নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছিল। তবে এ বিষয়ে তদন্ত আর এগোয়নি। একপর্যায়ে বাবুলকে চাকরিচ্যুত করা হয়।
পুলিশ-সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, মামলার বাদী নিজেই যদি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকেন, তাহলে আগের মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে পুলিশ বাদী হয়ে আবার মামলা করে থাকে। কারণ, বাদী হলেন অপরাধের প্রথম ও প্রধান তথ্যদাতা। তাঁর দেওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে সাক্ষ্য–প্রমাণ সংগ্রহ করা হয়। তাঁকেই আদালত প্রথম সাক্ষী হিসেবে তলব করে থাকেন। তাঁর সাক্ষ্যই মামলার ভিত্তি। সেদিক থেকে বাদী যদি আসামি হয়ে যান, আদালত অপরাধের বৃত্তান্ত কার কাছ থেকে শুনবেন, তা নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। প্রক্রিয়াগত কারণে নতুন বাদী নির্ধারণ করতে হয়।
মাহমুদা হত্যা মামলায়ও এই প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে। এ ক্ষেত্রে মাহমুদার বাবা মামলার বাদী হতে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
২০১৬ সালের ৫ জুন ভোরে চট্টগ্রাম শহরের জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয় মাহমুদা খানম ওরফে মিতুকে।
ওই ঘটনায় বাদী হয়ে বাবুল আক্তার পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন। তাতে তিনি বলেন, তাঁর জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রমের জন্য স্ত্রী আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হয়ে থাকতে পারেন। তবে সপ্তাহ দুয়েকের মাথায় মাহমুদা হত্যার তদন্ত নতুন মোড় নেয়। অব্যাহতভাবে মাহমুদার মা–বাবা এই হত্যার জন্য বাবুল আক্তারকে দায়ী করে আসছেন।