বাবার সঙ্গে আদালতে পৌঁছেছেন আয়শা

রিফাত শরীফ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা হবে বুধবার। সকালে বাবার সঙ্গে মোটরসাইকেলে করে বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে পৌঁছান রিফাতের স্ত্রী ও মামলার ৭ নম্বর আসামি আয়শা সিদ্দিকা
সাইয়ান

বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির রায় বুধবার ঘোষণা করবেন আদালত। রায়ের দিন ধার্য থাকায় বাবার সঙ্গে মোটরসাইকেলে করে সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে আদালত প্রাঙ্গণে পৌঁছান নিহত রিফাতের স্ত্রী ও ৭ নম্বর আসামি আয়শা সিদ্দিকা। রায় ঘোষণা ঘিরে আদালত প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। আয়শা এই মামলার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী ছিলেন।
হত্যাকাণ্ডের ১৮ দিন পর নিহত রিফাত শরীফের বাবা এক সংবাদ সম্মেলন করে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত উল্লেখ করে আয়শাকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান। বরগুনা পুলিশ গত বছরের ১৬ জুলাই জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে বাবার বাড়ি থেকে আয়শাকে পুলিশ লাইনে নিয়ে যায়। পরে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার দেখায়। এর পরের দিন ১৭ জুলাই তাঁকে আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। আদালত আয়শার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এ সময় তাঁর পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। টানা ৫৯ দিন কারাভোগের পর উচ্চ আদালত থেকে তিনি জামিনে মুক্ত হন।

আয়শা সিদ্দিকার বাবা মোজাম্মেল হোসেন বুধবার বলেন, ‘আমার মেয়ে ষড়যন্ত্রের শিকার। একটি কুচক্রী মহল তাঁকে এই হত্যার সঙ্গে জড়িয়েছে। আদালতের মাধ্যমে আমার মেয়ে নির্দোষ প্রমাণিত হবে বলে আশা প্রকাশ করছি।’
রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক আসামিরা হলেন রাকিবুল হাসান ওরফে রিফাত ফরাজি, আল কাইউম ওরফে রাব্বি আকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, রেজওয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়, মো. হাসান, মো. মুসা, আয়শা সিদ্দিকা ওরফে মিন্নি, রাফিউল ইসলাম রাব্বি, মো. সাগর ও কামরুল ইসলাম ওরফে সাইমুন।
১৬ সেপ্টেম্বর এ মামলার দুই পক্ষের যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আসাদুজ্জামান রায়ের জন্য আজকের দিন ঠিক করেন।

রিফাত শরীফ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা হবে বুধবার। সকালে বাবার সঙ্গে মোটরসাইকেলে করে বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে পৌঁছান রিফাতের স্ত্রী ও মামলার ৭ নম্বর আসামি আয়শা সিদ্দিকা

গত বছরের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে রিফাত হত্যাকাণ্ড ঘটে। ঘটনার পরের দিন ১২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৫-৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন নিহত রিফাতের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ। ওই বছরের ১ সেপ্টেম্বর ২৪ জনকে অভিযুক্ত করে প্রাপ্ত ও অপ্রাপ্তবয়স্ক দুই ভাগে বিভক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেয় পুলিশ। এর মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জন এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত প্রাপ্তবয়স্ক আসামি মো. মুসা এখনো পলাতক।
গত ১ জানুয়ারি রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত। এরপর ৮ জানুয়ারি থেকে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করেন আদালত। মোট ৭৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে এ মামলায়।