নিখোঁজের তিন দিনের মাথায় বান্দরবানের অপহৃত আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর চথোয়াইমং মারমার (৫৫) লাশ উদ্ধার হয়েছে। আজ শনিবার জেলা সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দুরে জর্ডানপাড়ার একটি বাঁশবনে তাঁর লাশ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এর আগে গত বুধবার চথোয়ামং মারমাকে উজিমুখ হেডম্যানপাড়ার বাগানবাড়ি থেকে একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী অপহরণ করেছিল বলে অভিযোগ ওঠে। চথোয়ামং মারমার জেলা শহরের মধ্যমপাড়ার মারমা বাজার এলাকার বাসিন্দা।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আজ দুপুরে এলাকার লোকজন একটি লাশের সন্ধান পেয়েছেন এমন খবর পায় পুলিশ। পরে পুলিশ সেখানে গিয়ে ওই লাশটি উদ্ধার করে।
কুহাল ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য অংচাহ্লা মারমা বলেন, উজিমুখ হেডম্যানপাড়ার উত্তর-পশ্চিমে জর্ডানপাড়া ও কাঁট্টলিপাড়ার বাসিন্দারা মিলে আজ সকালে চথোয়াইমং মারমাকে খুঁজতে বের হন। তাঁরা কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে জঙ্গলবেষ্টিত পাহাড় ও ঝিরিঝরনার খাদে খুঁজতে থাকেন। এ সময় জর্ডানপাড়া থেকে প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার দূরে শিলকঝিরির খাদে পচা গন্ধ পায় একটি দল। পরে সেই পচা গন্ধ অনুসরণ করে এগিয়ে গেলে ঝিরির খাদের একটি বাঁশবনে চথোয়াইমং মারমার লাশ পাওয়া যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, লাশের হাত-পা বাঁধা অবস্থায় মাটিতে উপুড় হয়ে পড়েছিল। অপহরণের পর তাঁকে নির্জন ওই জঙ্গলে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
বান্দরবান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, চথোয়াইমং মারমার লাশ শনাক্ত করা গেছে। তাঁরা ধারণা করছেন, জর্ডানপাড়া থেকে সাড়ে তিন-চার কিলোমিটার দূরে গহিন জঙ্গলে নিয়ে তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৯ দিনে পাল্টাপাল্টি হত্যা-অপহরণের ঘটনায় এ পর্যন্ত বান্দরবান সদর উপজেলার রাজবিলা ও কুহালং ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ ও আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল জনসংহতি সমিতির দুজন করে চারজন নেতা–কর্মী ও সমর্থক নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ৭ মে রাজবিলার তাইংখালীতে জেএসএসের সমর্থক বিনয় তঞ্চঙ্গ্যাকে হত্যা ও ফোলাধন তঞ্চঙ্গ্যাকে অপহরণের মধ্য দিয়ে দুই দলের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। ওই ঘটনার জেরে এসব নিহতের ঘটনা ঘটছে বলে এলাকাবাসী দাবি করেছে। এ ছাড়া গত ১৪ এপ্রিল তাইংখালী বাজারে অংক্যচিং নামে জেএসএসের এক নেতাকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছিল।