বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলায় সিয়াম মোল্লা নামের ছয় বছরের এক শিশু খুন হয়েছে। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে সিয়ামের বাবার দ্বিতীয় স্ত্রীকে আটক করেছে পুলিশ।
নিখোঁজের দুই দিন পর আজ মঙ্গলবার সকালে উপজেলার হোগলাবুনিয়া ইউনিয়নের বদনীভাঙ্গা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে সিয়ামের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ভাষ্য, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সিয়ামের সৎমা ফেরদাউসি বেগম শিশুটিকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।
সিয়ামের পরিবার জানায়, সিয়াম বদনীভাঙ্গা গ্রামের মিরাজ মোল্লার ছেলে। তিন বছর আগে তার মায়ের সঙ্গে বাবা মিরাজ মোল্লার বিবাহবিচ্ছেদ হয়। এর পর থেকে সিয়াম তার বাবার বাড়িতে দাদা-দাদির কাছে থাকত। বিবাহবিচ্ছেদের কিছুদিন পর ফেরদাউসির সঙ্গে বিয়ে হয় মিরাজের। তখন থেকে সিয়াম তাদের কাছে থাকত।
মোরেলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম আজিজুল ইসলাম বলেন, গত রোববার থেকে সিয়াম নিখোঁজ ছিল। অনেক খোঁজাখুঁজি করে কোথাও না পেয়ে গতকাল সোমবার সিয়ামের বাবা পুলিশে খবর দেন। গতকাল সন্ধ্যা থেকে নিখোঁজ শিশুটির সন্ধানে পুলিশ ওই এলাকায় অভিযান শুরু করে। আজ সকালে তাদের বাড়ির টয়লেটের পাশের আবর্জনার মধ্য থেকে পুঁতে রাখা শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
ওসি কে এম আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘সিয়ামের সৎমা ফেরদাউসির আচরণ সন্দেহজনক মনে হওয়ায় আমরা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করি। প্রথমে তিনি পরিবার ও পুলিশকে বলেন, সিয়াম বাড়ি থেকে বেরিয়ে এক মহিলার সঙ্গে কথা বলছিল। তার সঙ্গে চলে গেছে। পরে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সিয়ামকে শ্বাস রোধ করে হত্যার কথা স্বীকার করেন তিনি।’
ওসি বলেন, সিয়ামের বাবা মিরাজ মোল্লা ফেনীতে রিকশাভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। এখানে সিয়াম তার সৎমা ও দাদা-দাদির কাছে থাকত। কোনো বিষয় নিয়ে সিয়ামকে বকাঝকা করলে বা মার দিলে স্বামী তাঁর সঙ্গে খারাপ আচরণ করতেন বলে অভিযোগ করেন ফেরদাউসি। মিরাজ মোল্লার সাবেক স্ত্রী চট্টগ্রামের একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। তাঁর সঙ্গে স্বামীর যোগাযোগ আছে বলেও সন্দেহ করতেন ফেরদাউসি। এর জেরে দাদা-দাদি বাড়ি না থাকার সুযোগে সিয়ামকে শ্বাস রোধ করে হত্যা করে টয়লেটের পেছনে পুঁতে আবর্জনা দিয়ে ঢেকে রাখেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন তিনি।
শিশু সিয়ামের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।