ভোটের দিন রাতে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে গণধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত রুহুল আমিন ‘দলীয় সুযোগের কারণেই’ ধর্ষক হয়েছেন বলে মন্তব্য করেছে যৌন নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থী জোট। আজ শুক্রবার বিকেলে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ওই ঘটনার সরেজমিন তদন্ত শেষে গণপ্রতিবেদন উপস্থাপন কর্মসূচিতে এ মত দেয় সংগঠনটি৷
ওই গণধর্ষণের ঘটনার তদন্তে ৬ জানুয়ারি সেখানে যায় নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থী জোটের প্রতিনিধিদল। সেখানকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে তাঁদের মনে হয়েছে, ‘গণমাধ্যমের রিপোর্টে যা এসেছে, বাস্তবের চিত্র তার সবকিছুকেই হার মানিয়েছে৷’
কর্মসূচিতে গণপ্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সংগঠনটির আহ্বায়ক শিবলী হাসান৷ তিনি বলেন, ‘গণধর্ষণের শিকার চার সন্তানের জননী ভূমিহীন সংগঠনের একজন সদস্য এবং প্রতিবাদী চরিত্রের অধিকারী৷ তাই অনেক আগেই এই নারী রুহুল আমিনের সন্ত্রাসী বাহিনীর চক্ষুশূলে পরিণত হন৷ নির্বাচনের দিন রুহুলের পছন্দের প্রতীকে ভোট না দেওয়ায় ভোটকেন্দ্রেই রুহুল আমিন তাঁকে হুমকি দেন৷ সেই রাতেই রুহুল আমিন বাহিনীর ১৪ জনের একটি দল ওই নারীর স্বামী-সন্তানকে বেঁধে ওই নারীকে গণধর্ষণ করে ও নির্যাতন চালায়৷ ওই নারী অচেতন হয়ে পড়লে তাঁরা তাঁর ১৪ বছরের কন্যাশিশুকে খুঁজতে থাকে৷ কিন্তু শিশুটি কৌশলে পালিয়ে গেলে তাঁরা ক্ষিপ্ত হয়ে আবারও ওই নারীর ওপর নির্যাতন চালান৷ একপর্যায়ে তাঁকে (নারী) মৃত ভেবে তাঁরা পালিয়ে যায়৷’
সরেজমিন তদন্তে উঠে আসা ধর্ষণের পরিকল্পনাকারী ও নির্দেশদাতা রুহুল আমিনসহ ১৪ জনের নাম প্রকাশ করে সংগঠনটি৷ রুহুল আমিনের বিষয়ে গণপ্রতিবেদনে বলা হয়, ‘হোটেল বয়’ থেকে রুহুল আমিনের কোটিপতি হওয়ার পেছনে রয়েছে দলীয় প্রভাব৷
গণপ্রতিবেদন উপস্থাপন শেষে আইনের আওতায় ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতসহ ছয় দফা দাবি জানায় যৌন নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থী জোট৷ দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, গণধর্ষণের শিকার নারীকে দ্রুত ঢাকা এনে ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিসে স্থানান্তর, ওই নারী ও তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত, ৯০ দিনের মধ্যে গণধর্ষণ মামলার রায় প্রদান, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের নেতা হানিফ চৌধুরীকে দল থেকে বহিষ্কার এবং ‘রুহুল আমিন বাহিনীর’ সদস্যদের দ্রুত গ্রেপ্তার৷
গণপ্রতিবেদন উপস্থাপন কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে ভাস্কর রাশা, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ-বিসিএলের কেন্দ্রীয় সভাপতি শাহজাহান আলী সাজু, বাংলাদেশ ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইউনূস শিকদার প্রমুখ বক্তব্য দেন ৷