বরখাস্ত এসআই আকবরকে আদালতে হাজির করার সময় বিক্ষুব্ধ ও প্রতিবাদী মানুষের ভিড় ছিল আদালতের আশপাশের এলাকায়
বরখাস্ত এসআই আকবরকে আদালতে হাজির করার সময় বিক্ষুব্ধ ও প্রতিবাদী মানুষের ভিড় ছিল আদালতের আশপাশের এলাকায়

পুলিশের নির্যাতনে যুবকের মৃত্যু

বরখাস্ত এসআই আকবরের ৭ দিনের রিমান্ড

সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির বরখাস্ত উপপরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূঁঞার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক আওলাদ হোসেন আজ মঙ্গলবার দুপুরে আকবরকে আদালতে হাজির করে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। শুনানিতে সিলেটের মেট্রোপলিটন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবুল কাশেম আকবরের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গ্রেপ্তারের পর বরখাস্ত এসআই আকবর হোসেন ভূঁঞা

পিবিআই সিলেটের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ খালেদ-উজ-জামান প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনের মামলার প্রধান আসামি আকবর। তাঁকে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হলে আদালত তা মঞ্জুর করেন। এই মামলায় আকবরসহ চার পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া সন্দেহভাজন একজন গ্রেপ্তার আছেন।

আকবরকে আদালতে হাজির করার সময় বিক্ষুব্ধ ও প্রতিবাদী মানুষের ভিড় ছিল আদালতের আশপাশের এলাকায়। এ সময় অনেককে ‘আকবরের ফাঁসি চাই’ স্লোগান দিয়ে মিছিল করতে দেখা গেছে। কড়া পুলিশ পাহারায় আকবরকে আদালতে হাজির করা হয়। রিমান্ড মঞ্জুর হলে একইভাবে আদালত থেকে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়।

আকবর হোসেন ভূঁঞাকে সোমবার দুপুরে কানাইঘাটের সীমান্তবর্তী ডোনা এলাকা থেকে জেলা পুলিশের একটি দল গ্রেপ্তার করে। পুলিশ দাবি করছে, ভারতে পালানোর সময় তাঁকে দুপুর দেড়টার দিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তবে সীমান্ত এলাকার অন্য একটি সূত্র জানায়, আকবর কানাইঘাটের ডোনা সীমান্তের ওপারে খাসিয়া পল্লিতে বসবাস করছিলেন। খাসিয়ারা কৌশলে তাঁকে বাংলাদেশে পাঠালে পুলিশ খবর পেয়ে গ্রেপ্তার করে। সন্ধ্যায় সিলেটে নিয়ে আসার পর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় তাঁকে পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির বরখাস্ত এসআই আকবর হোসেন ভূঁঞার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। পরে আদালত থেকে তাঁকে কারাগারে নেওয়া হয়

সিলেট নগরীর আখালিয়া নিহারিপাড়ার বাসিন্দা রায়হানকে ১০ অক্টোবর রাতে সিলেটের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। পরের দিন ১১ অক্টোবর তিনি মারা যান। এ ঘটনায় হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে তাঁর স্ত্রী তাহমিনা আক্তার বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। মামলার পর মহানগর পুলিশের একটি অনুসন্ধান কমিটি তদন্ত করে নির্যাতনের সত্যতা পায়। ১২ অক্টোবর ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা এসআই আকবর হোসেন ভূঁঞাসহ চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়। ১৩ অক্টোবর আকবর পুলিশি হেফাজত থেকে পালিয়ে গা ঢাকা দেন।

পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশনায় মামলাটির তদন্ত পিবিআইয়ের ওপর ন্যস্ত হলে ১৯ অক্টোবর ফাঁড়ির সেন্ট্রি পোস্টে কর্তব্যরত তিন কনস্টেবল আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে রায়হানকে নির্যাতনের বর্ণনা ও নির্যাতনকরীদের নাম বলেন। রায়হানকে নির্যাতনের মূল হোতা ছিলেন আকবর।