বন্দুক, রাইফেলসহ ২০টি অস্ত্র উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৬

উদ্ধার করা অস্ত্র ও গুলি l ছবি: প্রথম আলো
উদ্ধার করা অস্ত্র ও গুলি l ছবি: প্রথম আলো

কক্সবাজারের চকরিয়ার প্রত্যন্ত এলাকার বসতবাড়িতে দুটি কারখানার সন্ধান পেয়েছে র‍্যাব। যেখানে দেশি অস্ত্র তৈরি করা হতো। গতকাল রোববার ভোর ৪টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত উপজেলার চিরিংগা ইউনিয়নের চরণদ্বীপের ডুলখালীপাড়ায় অভিযান চালায় র‍্যাব-৭-এর একটি দল। অভিযানে আটটি একনলা বন্দুক, একটি দোনলা বন্দুক, তিনটি রাইফেল, আটটি ওয়ান শুটারগান, ৪৯টি গুলিসহ অস্ত্র তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযানে এক নারীসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন আবদুল মান্নান ও তাঁর ভাই আইয়ুব খান, মহিউদ্দিন ওরফে মহিন মিয়া, নুরুল আলম, মো. আলম ওরফে নুরুল্লাহ ও জোনুয়ারা বেগম।

আবদুল মান্নান ও জোনুয়ারা বেগমের বাড়িতে অস্ত্র তৈরির দুটি পৃথক কারখানা গড়ে তোলা হয় বলে জানান র‍্যাব-৭ কক্সবাজার ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর মাহমুদ হাসান তারিক। ডুলখালীপাড়ার একটি ছড়ার এক পাড়ে আবদুল মান্নান ও অন্য পাড়ে জোনুয়ারা বেগমের বাড়ি। এর মধ্যে মান্নানের বাড়িতে মাটির নিচে গর্ত করে বন্দুক ও রাইফেলসহ ২০টি অস্ত্র লুকিয়ে রাখা হয়। অস্ত্র তৈরির কিছু সরঞ্জামও তাঁর বাড়িতে পাওয়া গেছে।

র‍্যাব কর্মকর্তা মেজর মাহমুদ হাসান তারিক বলেন, জোনুয়ারা বেগমের বাড়িতে অস্ত্র তৈরির মেশিন ও বিভিন্ন যন্ত্রাংশ (লেদ মেশিন, ড্রিল ও হেক্সো মেশিন, ট্রিগার গার্ড, বন্দুকের বাঁট, পাইপ/ব্যারেল, কাটিং মেশিন ইত্যাদি) পাওয়া গেছে।

 অভিযান শেষে গতকাল বিকেলে র‍্যাব-৭-এর কক্সবাজার ক্যাম্পে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এতে বলা হয়, এসব অস্ত্র চিংড়িঘেরের সন্ত্রাসী, অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গা ও দাগি সন্ত্রাসীদের কাছে বিক্রি করা হতো। যে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাঁদের বাড়ি কক্সবাজারের চকরিয়া ও কুতুবদিয়া উপজেলায়। কয়েক বছর ধরে তাঁরা চরণদ্বীপে বসবাস করছেন এবং ঘরেই অস্ত্র তৈরির কারখানা গড়ে তোলেন।

সংবাদ সম্মেলনে মেজর তারিক বলেন, অভিযানে জোনুয়ারা বেগমকে গ্রেপ্তার করা গেলেও তাঁর স্বামী পালিয়ে যান।

এদিকে অভিযানের পর চরণদ্বীপের ডুলখালীপাড়া এলাকায় গেলে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, অস্ত্র তৈরির কারখানার কথা তাঁরা আগে থেকে জানতেন। কিন্তু কাউকে বলার সাহস ছিল না। তাঁদের দাবি, র‍্যাব যখন অভিযান চালায়, তখন আধা কিলোমিটার দূরে সন্ত্রাসীরা অস্ত্রের মহড়া দিয়েছে।

এ বিষয়ে চকরিয়া থানার ওসি মো. জহিরুল ইসলাম খানবলেন, কিছুদিন আগেও চরণদ্বীপ এলাকায় অভিযান চালানো হয়। শিগগিরই সেখানে আরও অভিযান চালানো হবে।