মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় ফুলবাড়ী চা–বাগানের প্রধান করণিকের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে অপসারণের দাবি তুলেছেন সাধারণ চা–শ্রমিকেরা। গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে সাতটা থেকে বিকেল পর্যন্ত শ্রমিকেরা এই দাবিতে কর্মবিরতি পালন করেন। সন্ধ্যায় শ্রম অধিদপ্তর ও চা–শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের উপস্থিতিতে আট সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি চা–শ্রমিকদের আশ্বাস দেয়, আগামী সাত দিনের মধ্যে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দেওয়া হবে। এরপর কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেন শ্রমিকেরা।
চা–বাগান সূত্রে জানা যায়, এম আহমেদ গ্রুপের ফুলবাড়ী চা–বাগানে অস্থায়ী শ্রমিকদের তালিকা থেকে ১০ জন শ্রমিককে স্থায়ীকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ছয়জনকে স্থায়ীকরণ করা হয়। বাকি চারজনের স্থায়ীকরণ নিয়ে বাগানের প্রধান করণিক সায়েদ আহমদের বিরুদ্ধে অর্থ আদায়ের মৌখিক অভিযোগ তোলেন শ্রমিকেরা।
চা–শ্রমিকদের অভিযোগ, সায়েদ আহমদ শ্রমিক তালিকায় স্থায়ীভাবে নাম অন্তর্ভুক্ত করবেন—এমন প্রত্যাশা দিয়ে প্রায় দেড় মাস আগে বাগানের চার শ্রমিকের কাছ থেকে ৬৭ হাজার ৫০০ টাকা আদায় করেন। তবে তারপরও তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় শ্রমিকেরা বিষয়টি নিয়ে বাগান ব্যবস্থাপকসহ বিভিন্ন মহলে মৌখিক অভিযোগ করেন।
ওই চার শ্রমিক বলেন, স্থায়ীকরণ তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য সায়েদ আহমদকে টাকা দিতে বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছিলেন তাঁরা।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গতকাল সকাল থেকে সব শ্রমিক চা–বাগান অফিসের সামনে অবস্থান নিয়ে কর্মবিরতি শুরু করেন। পরে সন্ধ্যার দিকে চা–শ্রমিক ইউনিয়নের স্থানীয় নেতা, শ্রীমঙ্গলে শ্রম অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ও চা–বাগান স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা বাগান ব্যবস্থাপকের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। বৈঠকে বিষয়টি তদন্তের জন্য আট সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
অভিযোগের বিষয়ে সায়েদ আহমদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘অভিযোগটি সঠিক নয়। শ্রমিকেরা ম্যানেজমেন্টকে এ বিষয়ে অভিযোগ দিয়েছে। ম্যানেজমেন্ট আমার সঙ্গে আলোচনা করার পর বিষয়টি আমি জানতে পারি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এম আহমদ গ্রুপের জেনারেল ম্যানেজার ও ফুলবাড়ী চা–বাগানের ম্যানেজার লুৎফুর রহমান বলেন, শ্রমিকদের দৈনিক হাজিরায় সর্বোচ্চ উপস্থিতি, আন্তরিকতা—এসব বিষয় যাচাই–বাছাই করে ১০ জন শ্রমিককে স্থায়ীকরণ করা হবে বলে জানানো হয়। ১০ জনের মধ্যে ছয়জনকে নিয়ে কোনো আপত্তি ছিল না। তাই তাঁদের স্থায়ীকরণ করা হয়। চারজনের ওপর আপত্তি থাকায় এগুলো যাচাই করা হচ্ছে। বিষয়টি সম্পূর্ণ ম্যানেজমেন্ট করে থাকে। সেখানে কোনো শ্রমিক প্রধান করণিককে টাকা দিয়েছেন—এমন অভিযোগ আগে পাননি। তদন্ত কমিটি হয়েছে।