ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় বোনের বাড়ির একটি কক্ষে ভাইয়ের গলাকাটা লাশ পাওয়া গেছে। গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে আলফাডাঙ্গা পৌরসভার বাকাইল মহল্লার বাসিন্দা লাকী বিশ্বাসের বাড়ির একটি কক্ষ থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত ব্যক্তির নাম শিপন বিশ্বাস (৩০)। তিনি নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কালীগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি তৃতীয়।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শিপনের বোন লাকী বিশ্বাসের সঙ্গে সাড়ে তিন বছর আগে আলফাডাঙ্গা পৌরসভার বাকাইল মহল্লার লিটন বিশ্বাসের (৪২) বিয়ে হয়। লিটন বিশ্বাস পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। গত বুধবার লিটন বিশ্বাসের বাবা দুলাল বিশ্বাস মারা যান। এ খবর পেয়ে শিপন তাঁর মাকে নিয়ে লিটন-লাকীর বাড়িতে যান। গতকাল শুক্রবার দুপুরে ওই বাড়িতে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। ওই অনুষ্ঠানের পর শিপনের মা বাড়ি ফিরে গেলেও শিপন বোনের বাড়িতে থেকে যান।
লিটনের পরিবারের সদস্য ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাড়ির একটি টিনের ঘরের মধ্যে লিটনের গলাকাটা লাশ দেখতে পান পরিবারের সদস্যরা। পরে তাঁরা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে আজ শনিবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গে পাঠান।
লাশ উদ্ধারকারী পুলিশ জানায়, শিপনের মরদেহ ঘরের মেঝেতে গলাকাটা অবস্থায় পড়েছিল। মৃতদেহের পাশে রক্তমাখা একটি বটি ও শিপনের ব্যবহৃত এক জোড়া স্যান্ডেল পাওয়া গেছে। যে ঘরে শিপনের লাশ পাওয়া গেছে, সে ঘরের দরজা লাগানো ছিল না।
আলফাডাঙ্গা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সেলুমুজ্জামান বোনের বাড়িতে ভাইয়ের লাশ পাওয়ার খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে শিপনের বোন লাকী বেগমের দাবি, তাঁর ভাই মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। তিনি নিজেই বটি দিয়ে গলা কেটে আত্মহত্যা করেছেন।
তবে আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম এ মৃত্যুর ঘটনাকে ‘রহস্যজনক’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এ ব্যাপারে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। তিনি বলেন, প্রাথমিক তদন্তে শিপন মাদকাসক্ত ও মানসিক ভারসাম্যহীন বলে জানা গেছে। নেশার টাকার জন্য তিনি মাকে মারপিট করতেন। বোনের বাড়িতে গিয়েও টাকার জন্য বোনকে শাবল নিয়ে মারতে গিয়েছিলেন।