বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক সাড়ে আটটা। পঞ্চগড় পৌরসভার কামাতপাড়া এলাকার একটি বাড়ির ফটকের সামনে পড়ে আছে ফুটফুটে একটি নবজাতক। পরিষ্কার একটি তোয়ালেতে মোড়ানো শিশুটির পরনে কমলা রঙের জামা। জুলেখা বেগম নামের স্থানীয় এক নারী প্রথম শিশুটিকে দেখে কোলে তুলে নেন। এরপর থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ এসে নবজাতকটিকে উদ্ধার করে পঞ্চগড় সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়।
খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যান পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলীসহ জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের অন্য কর্মকর্তারা। শিশুটিকে হাসপাতালের সিসি (চাইল্ড কেয়ার) ইউনিটে রাখা হয়। পরে হাসপাতালে উপস্থিত অন্য শিশুদের মায়েদের মাধ্যমে শিশুটির খাবারের ব্যবস্থা করা হয়।
উদ্ধার করা নবজাতকটির অভিভাবকদের কোনো পরিচয় শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। গতকাল রাত ১০টার দিকে হঠাৎ করে শিশুটির মায়ের সন্ধান পাওয়া গেছে এমন খবর ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু আজ দুপুর পর্যন্ত খুঁজেও ওই নারীর কোনো সন্ধান পায়নি পুলিশ।
শিশুটির স্বাস্থ্যের ব্যাপারে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা মঈন খন্দকার প্রথম আলোকে বলেন, শিশুটির বয়স আনুমানিক এক মাস। শারীরিকভাবে শিশুটি সুস্থ আছে। তবে তার জন্য এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি হলো বুকের দুধ।
পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী আজ শুক্রবার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা শিশুটির পরিচয় খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। বিভিন্ন থানায় শিশুটির ব্যাপারে তথ্য পাঠানো হয়েছে। স্থানীয় লোকজন যে নারীর কথা বলছেন, আমরা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি। আমরা চাই শিশুটি তার প্রকৃত অভিভাবকদের ফিরে পাক।’
জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘কোনো মা যদি শিশুটিকে এভাবে ফেলে রেখে যায়, তাহলে তা খুবই দুঃখজনক। ফুটফুটে বাচ্চাটির ভবিষ্যৎ সুন্দর করা আমাদের দায়িত্ব, রাষ্ট্রের দায়িত্ব। আমরা শিশুটিকে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছি।