রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ধর্ষণ মামলার এক আসামি নিহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার ভোরে উপজেলার পীরগাছা এলাকায় বন্দুকযুদ্ধের এই ঘটনা ঘটে। নিহত এখলাস আলী (২৮) উপজেলার হলহোলিয়া গ্রামের কাসেম আলীর ছেলে।
এখলাস নিজ শ্যালিকাকে ধর্ষণ ও আত্মহত্যা প্ররোচনা মামলার প্রধান আসামি ছিলেন। গত ১০ জুন মেয়েকে ধর্ষণ ও আত্মহত্যা প্ররোচনা মামলায় আসামিকে গ্রেপ্তার ও বিচার চেয়ে পুঠিয়া উপজেলা পরিষদের সামনে অবস্থান নেন ভুক্তভোগীর বাবা।
র্যাব-৫–এর অধিনায়ক এ টি এম মাইনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, পুঠিয়ায় পীরগাছা এলাকায় এখলাসসহ আরও কয়েকজন মাদকসেবন ও মাদকসহ অবস্থান করছিলেন। র্যাব সেখানে অভিযান পরিচালনা করলে তাঁরা র্যাবের ওপর আক্রমণ করেন। আত্মরক্ষার্থে র্যাবও গুলি ছোড়ে। এ ঘটনায় র্যাবের দুজন সদস্য আহত হয়েছেন। আর হামলাকারীদের একজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে তিনি মারা যান। পরে তাঁরা থানায় খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, এখলাসের বিরুদ্ধে শ্যালিকাকে ধর্ষণ ও আত্মহত্যা প্ররোচনা মামলা ছিল।
র্যাবের অধিনায়ক আরও বলেন, অভিযানে তাঁদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, দুটি গুলি ও ৪৮০টি ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। লাশ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
পুঠিয়া থানার পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত জানুয়ারি মাসে এখলাস আলীর সঙ্গে নিহত কিশোরীর বড় বোনের বিয়ে হয়। মার্চ মাসের শেষ দিকে শ্বশুর-শাশুড়ি আত্মীয়বাড়িতে গেলে ছোট মেয়ে একা হয়ে যায়। দুই বোন একসঙ্গে থাকলে ভালো হয় জানিয়ে জামাই এখলাস এসে ছোট বোনকে নিয়ে যান। সে বড় বোনের বাড়িতে এক সপ্তাহের মতো থাকে। এরপর বাড়ি এসে কারও সঙ্গে কোনো কথা বলে না। চঞ্চল কিশোরীটি গম্ভীর হয়ে যাওয়ার কারণ জানতে চান মা। পরে সে মাকে বলে দেয়, দুলাভাই জুসের মধ্যে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাইয়ে শারীরিক নির্যাতন করতেন। পরে তাঁরা এখলাসের বাড়ি থেকে বড় মেয়েকে নিয়ে আসেন। পারিবারিকভাবে বিষয়টি মীমাংসা করার চেষ্টা হয়। ঘটনা জানাজানি হলে গত ৯ এপ্রিল লজ্জায় কিশোরীটি আত্মহত্যা করে।
সেদিন রাতে মেয়েটির বাবা তিনজনকে আসামি করে ধর্ষণ ও আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা করেন। তবে মামলার পর থেকে প্রধান আসামি এখলাস পলাতক ছিলেন বলে পুলিশ সূত্রে জানা যায়।