আদালতে স্বীকারোক্তি

পি কের প্রতিষ্ঠান থেকে ঘুষ নিতেন তাঁরা

অনিয়ম চাপা দিতে ঘুষ নিত বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও পরিদর্শক দল। যুক্ত ছিলেন সাবেক এক ডেপুটি গভর্নর।

  • আদালতে ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের সাবেক এমডি রাশেদুল হকের জবানবন্দি।

  • রাশেদুল হক এমডি হলেও পি কে হালদারই ইন্টারন্যাশনাল লিজিং পরিচালনা করতেন।

  • অর্থ আত্মসাতে সহায়তাকারীদের নাম এসেছে জবানবন্দিতে।

  • ৩০ প্রতিষ্ঠানের নামে আত্মসাৎ ২ হাজার ২৯ কোটি টাকা।

প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদার

আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অনিয়ম চাপা দিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন কর্মকর্তাদের পাঁচ থেকে সাত লাখ টাকা করে দিত রিলায়েন্স ফাইন্যান্স ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিং। আর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের তৎকালীন মহাব্যবস্থাপক শাহ আলমকে প্রতি মাসে দেওয়া হতো দুই লাখ টাকা করে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অনিয়ম-দুর্নীতি ‘ম্যানেজ’ করতেন সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী।

এই কর্মকর্তাদের সহায়তায় কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছেন আলোচিত প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদার। ফলে কমপক্ষে চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আমানতকারীরা এখন টাকা ফেরত পাচ্ছেন না। এর মধ্যে একটি অবসায়নের সিদ্ধান্ত হয়েছে, দুটিতে চেয়ারম্যান নিয়োগ দিয়েছেন আদালত।

ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রাশেদুল হক আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব কথা বলেছেন। পি কে হালদারের সহযোগী হয়ে প্রায় ৭১ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। গত ২৩ জানুয়ারি রাজধানীর সেগুনবাগিচা থেকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধানের নেতৃত্বে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। দুদক তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে আসে। তিন দিনের মাথায় গত মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বাকী বিল্লাহর কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

প্রতি মাসে দুই লাখ টাকা নেওয়ার বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৩৮ মিনিটে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের তৎকালীন মহাব্যবস্থাপক ও বর্তমান নির্বাহী পরিচালক শাহ আলমের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি প্রসঙ্গটি শোনেন। এরপর বলেন, ‘আচ্ছা আমি এখন বাইরে আছি। কথা বলতে পারছি না।’ এরপর ফোনটি কেটে দেন তিনি। আর সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুরের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। সম্প্রতি তাঁকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।

১৯৯৮ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগদান করেন শাহ আলম। আর আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর দেখভালের দায়িত্বে থাকা আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের মহাব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পান ২০১৩ সালের অক্টোবরে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে তিনি নির্বাহী পরিচালক হিসেবে পদোন্নতি পান। এখনো তিনি আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর দায়িত্বে। তাঁর মেয়াদেই দেশের কমপক্ষে ১০টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বড় ধরনের দুর্নীতি হয়। ফলে অর্ধেকই এখন টাকা ফেরত দিতে পারছে না। আর এসব দুর্নীতি মাঠে থেকে নেতৃত্ব দেন পি কে হালদার। এ সময়ে তিনি রিলায়েন্স ফাইন্যান্স ও এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের এমডি ছিলেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম গত রাতে এ নিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘এমনটা হয়ে থাকলে অন্যায় করেছে। তবে ব্যক্তির দায় প্রতিষ্ঠান নেবে না।’

জবানবন্দিতে যা বলেছেন

রাশেদুল হক জবানবন্দিতে বলেছেন, পি কে হালদারের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎকালীন ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরীর গভীর সম্পর্ক ছিল। তাঁর অন্যতম ক্ষমতার উৎস ছিলেন সুর চৌধুরী। তাঁর মাধ্যমেই পি কে হালদার বিভিন্ন অনিয়মকে ম্যানেজ করতেন। এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন বিভাগ থেকে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং পরিদর্শন করার জন্য বছরে দুবার সহকারী পরিচালক থেকে যুগ্ম পরিচালক পদের দুজন কর্মকর্তা আসতেন। তখন অনিয়ম করার (অনিয়ম না ধরার জন্য) জন্য তাঁদের প্রতিবার পাঁচ থেকে সাত লাখ টাকা করে ঘুষ দেওয়া হতো। এর ভিত্তিতে তাঁরা ইতিবাচক প্রতিবেদন দিতেন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্মকর্তাদের অপকর্মসহ সামগ্রিক বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘুষ নেওয়ার ঘটনা ঘটে থাকলে সেটা অত্যন্ত দুঃখজনক। দোষী যে-ই হোক না কেন, তদন্ত করে তাঁদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ও আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। শক্ত হাতে এসব বিষয়ের সমাধান না করলে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো আরও ভেঙে পড়বে।’

পি কে হালদারের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে রাশেদুল হক জবানবন্দিতে বলেছেন, রিলায়েন্স ফাইন্যান্সে সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট (এসভিপি) হিসেবে কাজ করার সময় রুনাই আহমেদ, আল মামুন সোহাগ, রাফসান রিয়াদ চৌধুরীও সেখানে কাজ করতেন। তাঁরা ঋণ প্রস্তাবনা তৈরি করতেন। পি কে হালদার তখন রিলায়েন্সের এমডি ছিলেন। তিনি সেখানে একক কর্তৃত্ব খাটাতেন। তাঁর কাছে লোকজন এলে রুনাই, আল মামুন ও রাফসান রিয়াদকে দিয়ে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে ঋণ প্রস্তাব করে বোর্ডে উপস্থাপন করে অনুমোদন করিয়ে নিতেন। বোর্ডের সদস্যরাও এ বিষয়ে জানতেন। বোর্ডে তখন মমতাজ উদ্দিন নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকও ছিলেন।

রাশেদুল হক মালয়েশিয়া থেকে বিবিএ সম্পন্ন করে ২০০০ সালে ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ে প্রবেশনারি কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন। ২০০৬-০৭ সালে তিনি আইআইডিএফসিতে এভিপি হিসেবে পি কে হালদারের অধীনে চাকরি করেন। ২০০৯ সালে লংকাবাংলা ফাইনান্সে ভিপি হিসেবে যোগ দেন। এরপর ২০১১-১২ সালে রিলায়েন্স ফাইন্যান্সে এসভিপি হিসেবে যোগদান করেন। রিলায়েন্সে থাকাকালে রাশেদুল হক সর্বশেষ ডিএমডি হিসেবে পদোন্নতি পান। ২০১৫ সালে রিলায়েন্সের এমডি পি কে হালদার এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকে যোগ দেন। তখন পি কে হালদারের কথামতো রাশেদুল রিলায়েন্স ছেড়ে ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের এমডি পদে যোগ দেন বলে আদালতকে বলেন।

কোম্পানি পরিচালনা করতেন পি কে হালদার

জবানবন্দিতে রাশেদুল হক বলেছেন, তিনি এমডি হলেও মূলত পি কে হালদারই কোম্পানিটি পরিচালনা করতেন। রুনাই, আল মামুন সোহাগ ও রাফসান চৌধুরীকে ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ে নিয়ে আসেন পি কে হালদার। তাঁরা সরাসরি পি কে হালদারের সঙ্গে ‘ডিল’ করতেন। রুনাই ছিলেন হেড অব বিজনেস। পুরো কাজে তাঁদের সহায়তা করতেন ট্রেজারি প্রধান অভিক সিনহা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, পি কে হালদার যখন ইন্টারন্যাশনাল লিজিং দখল করেন এবং প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা বের করেন, তখন এমডি ছিলেন রাশেদুল হক। ২০১৫ সাল পর্যন্ত ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের চেয়ারম্যান ছিলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহবুব জামিল। তখন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি শক্তিশালী অবস্থায় ছিল। ২০১৫ সালের শেষের দিকে শেয়ার কিনে ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের নিয়ন্ত্রণ নেয় হাল ইন্টারন্যাশনাল, বিআর ইন্টারন্যাশনাল, নেচার এন্টারপ্রাইজ ও নিউ টেক এন্টারপ্রাইজ। হাল ইন্টারন্যাশনালের ৭০ শতাংশ শেয়ারের মালিক পি কে হালদার নিজে ও তাঁর ভাই প্রীতিশ কুমার হালদারের শেয়ার ১০ শতাংশ। এভাবে প্রতিষ্ঠানটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর নামে-বেনামে ৩০টি প্রতিষ্ঠানের নামে বের করা হয় ২ হাজার ২৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১ হাজার ৫৯৬ কোটি টাকার সুবিধাভোগী পি কে হালদার ও তাঁর সহযোগীরা। পি কে হালদার এখন দেশছাড়া, অন্যরা বহাল তবিয়তে। কেউ কেউ প্রতিষ্ঠানটির পর্ষদেও আছেন।

জবানবন্দিতে রাশেদুল হক বলেছেন, পি কে হালদার নিজে কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার হলেও তিনি বোর্ডের পরিচালক ছিলেন না। রুনাই, সোহাগের মাধ্যমে ঋণ প্রস্তাব তৈরি করে পি কে হালদার তাঁর সই নিয়ে বোর্ডে উপস্থাপন করতেন। বোর্ডকে প্রভাবিত করে ঋণ অনুমোদন করিয়ে দিতেন। বোর্ডের সদস্যরা আপত্তি জানালে তিনি নিজে বোর্ডের সদস্যদের রাজি করাতেন। ঋণ অনুমোদন হওয়ার পর যে কোম্পানি ঋণ নিত, তাঁর অথবা তাঁদের কথামতো অন্য কোম্পানিকে টাকা ছাড় করা হতো। পুরো টাকা আবার পি কে হালদারের কাছে যেত। ওই সব কোম্পানির বেশির ভাগেরই মালিক ছিলেন পি কে হালদারের আত্মীয়স্বজন। পি কে হালদার বোর্ডের সদস্য না হওয়া সত্ত্বেও বেশির ভাগ বোর্ড সভায় উপস্থিত থাকতেন।

এদিকে অর্থ পাচার ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান তদারকি-নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগে গত এক যুগে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের বিস্তারিত তথ্য জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। ২০০৮ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের তালিকা ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দাখিল করতে বাংলাদেশ ব্যাংককে গত ২১ জানুয়ারি আদালত নির্দেশ দিয়েছেন।

টাকা যেত অন্য হিসাবে

রাশেদুলের জবানবন্দি অনুযায়ী, ঋণ অনুমোদনের পর পি কে হালদারের নির্দেশে গ্রাহকের হিসাবে টাকা না পাঠিয়ে অন্য হিসাবে পাঠানো হতো। বর্ণ, এস এ এন্টারপ্রাইজ, আরবি এন্টারপ্রাইজ, আইমেক্সকো, হাল ইন্টারন্যাশনাল, পিঅ্যান্ডএল ইন্টারন্যাশনাল, মুন এন্টারপ্রাইজ, কনিকা, ওকায়া, উইন্টেল ইন্টারন্যাশনাল ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের নামে টাকা পাঠানো হতো। মূলত পি কে হালদারই নামে-বেনামে সেগুলোর মালিক ছিলেন। এ বিষয়ে রাশেদুল জানতে পারেন ২০১৭ সালে। এ ছাড়া জেনিথ অ্যান্ড লিপ্রো ইন্টারন্যাশনাল নামে দুটি প্রতিষ্ঠানকে বোর্ডের অনুমোদন ছাড়াই পি কে হালদারের নির্দেশে ১২৫ কোটি টাকা দেওয়া হয়। পি কে হালদার বলেছিলেন, তিনি পরে বোর্ড থেকে অনুমোদন নিয়ে নেবেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে অনুমোদন নেননি। এ ছাড়া ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট থেকে পি কে হালদারের নির্দেশে বোর্ডের অনুমোদন ছাড়াই তাঁর জানামতে ২০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়।

রাশেদুল বলেন, ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের বোর্ড মেম্বারদের মধ্যে মো. নওশারুল ইসলাম, মমতাজ বেগম, বসুদেব ভট্টাচার্য, পাপিয়া ভট্টাচার্য অনিয়ম করে বেআইনিভাবে নিজেদের প্রতিষ্ঠান যেমন এমটিবি, এমএসপি ফার্মা, নিউট্রিশনাল, জিঅ্যান্ডজি এন্টারপ্রাইজের নামে ঋণ নিয়ে জমা না দিয়ে তা পি কে হালদারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর করতেন। আনান কেমিক্যাল, রহমান কেমিক্যাল, নর্দান জুট ম্যানুফ্যাকচারিংসহ বিভিন্ন কোম্পানির নামে যাচাই-বাছাই ছাড়াই পি কে হালদারের কথামতো ঋণ দেওয়া হয়, যা পরবর্তী সময়ে পি কে হালদারের প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর করা হতো।

যাঁদের নামে ঋণ দিয়ে আত্মসাৎ

জবানবন্দিতে রাশেদুল হক বলেছেন, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের পরিচালক ও সাবেক চেয়ারম্যান এ কে এম সাহিদ রেজার বিভিন্ন কাগুজে প্রতিষ্ঠানকে পি কে হালদারের নির্দেশে ঋণ প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়া সিমটেক্সের মালিক সিদ্দিকুর রহমান, ব্যাংক এশিয়ার সাবেক এমডি ইরফান উদ্দিন আহমেদ, পিপলস লিজিংয়ের চেয়ারম্যান উজ্জ্বল কুমার নন্দী, রাজীব সোম, কাজী মোমরেজ মাহমুদ, ডিজাইন অ্যান্ড সোর্সের মালিক মো. জাহাঙ্গীর আলম, সন্দীপ করপোরেশনের মালিক স্বপন কুমার মিস্ত্রী, উত্তম কুমার মিস্ত্রী, সুখাদা প্রোপার্টির মালিক অমিতাভ অধিকারী, মুন এন্টারপ্রাইজের মালিক শঙ্খ ব্যাপারী, হাল ইন্টারন্যাশনালের মালিক সুস্মিতা সাহা, গোপাল চন্দ্র গাঙ্গুলী, অতশী মৃধা, অমল চন্দ্র দাস, রতম কুমার বিশ্বাস ছিলেন পি কে হালদারের সহযোগী এবং তাঁদের নামে পি কে হালদার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বানিয়ে ঋণপত্র তৈরি করে নিজে টাকা সরিয়ে নিতেন। বেশির ভাগই ছিল কাগুজে প্রতিষ্ঠান।

এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি পি কে হালদার বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে অন্তত সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা লোপাট করেন বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদন্তে উঠে আসে। পি কে হালদারের দখল করা প্রতিষ্ঠান চারটি হলো ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, পিপলস লিজিং, এফএএস ফাইন্যান্স ও বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি)। এর মধ্যে পিপলস লিজিং অবসায়নের জন্য অবসায়ক নিয়োগ করা হয়েছে, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং ও বিআইএফসিতে চেয়ারম্যান নিয়োগ দিয়েছেন আদালত।