পিরোজপুর সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (এসি ল্যান্ড) রামানন্দ পালের স্ত্রী অদিতি বড়াল (২৭) আবারও ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া একটার দিকে অজ্ঞাত এক দুর্বৃত্ত তাঁকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পিরোজপুরে জেলা প্রশাসনের ডরমিটরি ভবনে এ ঘটনা ঘটে।
অদিতি পিরোজপুরের সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর আগে বাগেরহাট, বরগুনার বেতাগী উপজেলায় ও পিরোজপুরে তাঁকে তিনবার ছুরিকাঘাত করা হয়েছিল।
অদিতি বড়াল বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার বাসিন্দা। সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কালিদাস বড়াল ও সাবেক নারী সাংসদ হ্যাপি বড়ালের মেয়ে অদিতি। তাঁর বাবা সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হয়েছেন।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, আজ বেলা সোয়া একটার দিকে অদিতি বড়াল বাসায় একা ছিলেন। এ সময় অজ্ঞাত এক যুবক বাসার কলবেল বাজায়। অদিতি ওই যুবকের পরিচয় জানতে চান। তখন ওই যুবক বাসার কাজের ছেলে কামালের পরিচয় দেয়। দরজা খোলার পর অজ্ঞাত পরিচয়ের ওই যুবক ঘরের ভেতরে ঢুকে অদিতিকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। এতে অদিতির পেটে জখম হয়। এ সময় রামানন্দ পাল তাঁর কার্যালয়ে ছিলেন।
রামানন্দ পাল বলেন, তিনি অফিসে ছিলেন। খবর পেয়ে অদিতিকে পিরোজপুর সদর হাসপাতালে নেন। তিনি আরও জানান, বাসায় বিদ্যুৎ না থাকায় ঘরে লাগানো সিসি ক্যামেরা কাজ করছিল না। তাই অদিতি দরজায় দাঁড়িয়ে থাকা যুবককে কাজের ছেলে ভেবে দরজা খুলে দেন। বারবার অদিতি বড়ালের ওপর হামলার কারণ তিনি বলতে পারছেন না।
পিরোজপুর সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক সাকিল সরোয়ার বলেন, ‘আজ বেলা দুইটার দিকে অদিতিকে হাসপাতালে আনা হয়। আমরা তাঁকে চিকিৎসা দেওয়ার পর বাসায় চলে যান। অদিতির পেটের নিচের দিকে ধারালো অস্ত্রের জখম আছে। তবে তিনি এখন শঙ্কামুক্ত।’
পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল হক বলেন, অদিতিকে ছুরিকাঘাতের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পুলিশ ওই যুবককে শনাক্তের চেষ্টা চালাচ্ছে।
এ ঘটনায় মামলা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে ওসি বলেন, গত বছরের নভেম্বরে অদিতিকে ছুরিকাঘাতের অভিযোগে পিরোজপুর সদর থানায় করা একটি মামলা এখনো তদন্তাধীন। আজকের ঘটনায় অভিযোগ পেলে মামলা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাগেরহাট শহরে অদিতিকে ছুরিকাঘাত করে দুর্বৃত্তরা। এরপর ২০১৮ সালের ৩ জুলাই রামানন্দ পালের কর্মস্থল বরগুনার বেতাগী উপজেলার বাসভবনে ও ওই বছরের ৮ নভেম্বর পিরোজপুরে জেলা প্রশাসনের ডরমিটরি ভবনের রামানন্দ পালের বাসায় অজ্ঞাত এক যুবক তাঁকে দুবার ছুরিকাঘাত করে। গত বছরের ঘটনায় রামানন্দ পাল অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে পিরোজপুর সদর থানায় মামলা করেছিলেন।