যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তির পর পালিয়ে গিয়েছিলেন করোনায় আক্রান্ত ১০ রোগী। এর মধ্যে সাতজন ভারতফেরত এবং তিনজন স্থানীয়ভাবে করোনায় সংক্রমিত। পরে তাঁদের ফিরিয়ে এনে হাসপাতালের রেড জোনে (করোনা ওয়ার্ড) ভর্তি করা হয়। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এই ১০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। আজ সোমবার সকালে পুলিশ যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল থেকে তাঁদের মধ্যে সাতজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছে।
গ্রেপ্তার সাতজন হলেন ভারতফেরত যশোর শহরের পশ্চিম বারান্দিপাড়া এলাকার বিশ্বনাথ দত্তের স্ত্রী মণিমালা দত্ত (৪৯), সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপপাড়া গ্রামের মিলন হোসেন (৩২), রাজবাড়ী সদর উপজেলার রামকান্তপুর গ্রামের নাসিমা আক্তার (৫০), খুলনা সদর উপজেলার বিবেকানন্দ (৫২), খুলনার পাইকগাছা উপজেলার ডামরাইল গ্রামের আমিরুল সানা (৫২), খুলনার রূপসা উপজেলার সোহেল সরদার (১৭) এবং স্থানীয় রোগী যশোর সদর উপজেলার পাঁচবাড়িয়া গ্রামের রবিউল ইসলামের স্ত্রী ফাতেমা (১৯)।
এ ছাড়া ভারতফেরত সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার শেফালি রানী সরদার (৪০) এবং স্থানীয় যশোর সদর উপজেলার পাঁচবাড়িয়া গ্রামের একরামুল কবীরের স্ত্রী রুমা (৩০) ও যশোর শহরের ওয়াপদা গ্যারেজ এলাকার ভদ্র বিশ্বাসের ছেলে প্রদীপ বিশ্বাস (৩৭) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পুলিশ জানায়, ভারতফেরত ও স্থানীয় ১০ জন করোনায় সংক্রমিত রোগী হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে জানায়। এরপর গত শনিবার যশোর কোতোয়ালি থানার পুলিশ ২০১৮ সালের সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইনের ২৫ (২) ধারায় আদালতে আবেদন দাখিল করে। গতকাল রোববার আদালত তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। আজ সোমবার সকালে হাসপাতাল থেকে সাতজনকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এরপর সেখান থেকে পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায়। এ ছাড়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত অপর তিনজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়ার পর তাঁদের গ্রেপ্তার করা হবে বলে পুলিশ জানায়।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত ১৮ থেকে ২৪ এপ্রিলের মধ্যে করোনায় সংক্রমিত সাতজন যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর হয়ে দেশে আসেন। তাঁদের মধ্যে ১৮ এপ্রিল একজন, ২৩ এপ্রিল পাঁচজন ও ২৪ এপ্রিল একজন আসেন। তাঁদের জরুরি বিভাগ থেকে হাসপাতালের তৃতীয় তলায় করোনা ওয়ার্ডে পাঠানো হয়। তাঁরা ওয়ার্ডে না গিয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যান। ভারতে করোনাভাইরাসের একটি নতুন ধরন শনাক্ত হওয়ায় এই পালানোর বিষয়টি আতঙ্কের সৃষ্টি করে।
যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।