সামনের বেঞ্চে বসে আল মামুন ও পেছনের বেঞ্চে বসে শাকিল আহমেদ এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। দুজনে একে অপরের বিরুদ্ধে খাতা দেখাদেখির অভিযোগ তুলে তর্কাতর্কি শুরু করেন। একপর্যায়ে পরীক্ষার হলেই দুজনের মধ্যে কিলঘুষি, কলম ও স্কেল ছোড়াছুড়ির ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে সুনামগঞ্জের ধরমপাশা উপজেলা সদরের জনতা মডেল উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের ২ নম্বর কক্ষে পৌরনীতি ও সুশাসন বিষয় পরীক্ষা চলাকালে এই ঘটনা ঘটে।
এই ঘটনায় ওই দুই পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে এবং ওই কক্ষে দায়িত্বে অবহেলার কারণে উপজেলার বাদশাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক জীবন চৌধুরী ও প্রদর্শক এ কে জাফিকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আবু তালেব বলেন, পরীক্ষা হলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করায় ওই দুজন পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া দায়িত্বে অবহেলার কারণে প্রভাষক জীবন চৌধুরী ও প্রদর্শক একে জাফিকে পরীক্ষা চলাকালীন সব দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
দায়িত্বে থেকে অব্যাহতি পাওয়া প্রভাষক জীবন চৌধুরী বলেন, ‘ওই দুজন পরীক্ষার্থীর মধ্যে শাকিল আহমেদ একটু বেশি বদমেজাজি। তাঁকে একাধিকবার সতর্ক করেও কোনো লাভ হয়নি। আমি ও প্রদর্শক জাফি তখন কক্ষের মধ্যে শিঙাড়া খাচ্ছিলাম। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই শাকিল আহমেদ ও আল মামুন একে অপরকে কিলঘুষি মারে। কলম ও স্কেল দিয়ে একে অপরকে আঘাত করে রক্তাক্ত করেছে। পরে আমরা দুজন শিক্ষক তাঁদের দুই দিকে সরিয়ে দিয়েছি।’
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে দায়িত্বে থাকা উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার রঞ্জন কিশোর চাকলাদার বলেন, আহত দুজন শিক্ষার্থীর মধ্যে একজনের ডান কানে চারটি সেলাই দেওয়া হয়েছে। অপর শিক্ষার্থীর ডান হাতে আঁচড় লেগেছে। দুজনকেই চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রসচিব ও ধরমপাশা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আবদুল করিম বলেন, দুজন পরীক্ষার্থী একে অপরের খাতা দেখাদেখিকে কেন্দ্র করে পরীক্ষাকক্ষে তুলকালাম কাণ্ড ঘটিয়েছে। বিষয়টি ভারপ্রাপ্ত ইউএনওকে জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার বেলা আড়াইটার দিকে ধরমপাশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এজাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা না ঘটে, সে জন্য দুই পরীক্ষার্থীর বাবার কাছ থেকে থেকে মুচলেকা নেওয়া হয়েছে।