নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় স্বামী-সন্তানদের বেঁধে রেখে এক নারীকে (৪০) মারধর ও গণধর্ষণের ঘটনায় আরেকজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁর নাম মো. স্বপন (৩৫)। গতকাল মঙ্গলবার রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হলো। গ্রেপ্তার অপর আসামি হলেন বাদশা আলম ওরফে কুড়াইল্যা বাসু (৪০)।
নির্যাতনের শিকার ওই নারী বর্তমানে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আজ বুধবার দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে তাঁর কাছে শারীরিক অবস্থার বিষয়ে জানতে চালে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এখনো পুরো শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা। ব্যথার কারণে কাত হয়ে ফিরতে পারেন না। সারা শরীরে নির্যাতনের জায়গাগুলোতে রক্ত জমে কালো হয়ে গেছে।
চরজব্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, মামলায় মো. সোহেল (৩৫), মো. হানিফ ৩০), মো. স্বপন (৩৫), মো. চৌধুরী (২৫), মো. বেচু (২৫), বাদশা আলম ওরফে কুড়াইল্যা বাসু (৪০), আবুল (৪০), মোশারফ (৩৫) ও ছালা উদ্দিনের (৩৫) নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মামলা করার পর এ পর্যন্ত দুজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তিনি জানান, বাদশা ও স্বপনকে গ্রেপ্তারের পর থানায় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কিন্তু তাঁরা ঘটনার বিষয়ে কিছু স্বীকার করেননি।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মো. খলিল উল্যাহ প্রথম আলোকে বলেন, ওই নারীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্যাতনের চিহ্ন আছে। গতকাল মঙ্গলবার থানা থেকে অনুরোধপত্র পাঠানোর পর তাঁরা আলামত সংগ্রহ করেছেন। তবে পরীক্ষার ফলাফল এখনো তাঁর হাতে এসে পৌঁছায়নি।
আজ জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পৃথক দুটি দল ঘটনার তদন্তে নোয়াখালীতে গেছে। তদন্ত দলের সদস্যরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নারী, তাঁর স্বামী ও সন্তানের সঙ্গে কথা বলেছেন।
এজাহারে ঘটনার বর্ণনায় ভোটকেন্দ্রে ভোট দেওয়া নিয়ে ঝামেলার বিষয়টি বাদ পড়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ওসি নিজাম উদ্দিন বলেন, বাদী যা যা বর্ণনা করেছেন, তাই উল্লেখ করা হয়েছে। এখন যদি তিনি কোনো কিছু বাদ গেছে বলে দাবি করেন, তাঁরা তদন্তে সেটিও খতিয়ে দেখবেন।
গত রোববার রাতে একদল যুবক ওই নারীর ঘরে ঢুকে প্রথমে তাঁকে ও তাঁর স্বামীকে মারধর করে। পরে স্বামী ও সন্তানদের বেঁধে রেখে ওই নারীকে ঘরের বাইরে নিয়ে গণধর্ষণ করা হয়।