পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র আল আমিন (১১) ১৭ জানুয়ারি গ্রামে অনুষ্ঠিত ওয়াজ মাহফিলে যোগ দিতে সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর আর ফেরেনি। নয় দিন পর গতকাল শনিবার রাতে তার গলিত লাশ মিলল প্রতিবেশী এক ব্যক্তির সেপটিক ট্যাংকের মধ্যে।
আল আমিনের বাড়ি শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানার চরকুমারিয়া ইউনিয়নের বাহেরচর নাজিম উদ্দিন মোল্যাকান্দি গ্রামে। সে ওই গ্রামের স্বপন মাঝির ছেলে। স্থানীয় ৭৬ নম্বর বাহেরচর কদমতলা মোল্যা বাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র।
পারিবারিক শত্রুতা বা কোনো ক্ষুব্ধ ব্যক্তি ওই শিশুকে হত্যা করে সেপটিক ট্যাংকের মধ্যে লাশ ফেলে দিয়েছে বলে পুলিশের সন্দেহ। স্বপন মাঝি বাদী হয়ে আজ রোববার দুপুরে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে সখিপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন।
সখিপুর থানা ও গ্রামবাসী জানায়, ১৭ জানুয়ারি সন্ধ্যায় গ্রামের ওয়াজ মাহফিলে যোগ দিতে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেনি আমিন। তাকে কোথায়ও খুঁজে না পেয়ে পরের দিন সখিপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। তার সন্ধান চেয়ে এলাকায় মাইকিং করা হয়। গতকাল রাত আটটার দিকে তার বাবা-মা প্রতিবেশী শরীফ মোল্যার বাড়ির পাশের টয়লেটের সেপটিক ট্যাংক খুলে ছেলের মৃতদেহ দেখতে পান। থানায় খবর দিলে রাতেই পুলিশ ওই শিশুর লাশ উদ্ধার করে। আজ সকালে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
স্বপন মাঝি স্থানীয় মোল্যার বাজারের ব্যবসায়ী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘নয় দিন যাবৎ ছেলে নিখোঁজ। সব জায়গায় খুঁজছি,ওর মারে সান্ত্বনা দিতাম ছেলে ফিরে আইব,তারে খুঁইজা পামু। কিন্তু ছেলেকে খুঁজে পাইলাম,নিথর দেহ। আল্লাহ কেন আমার সঙ্গে এমন করা হলো। আমার কোনো শত্রু নাই,কে ছেলেরে মারল?’
আল আমিনের বাড়ির পাশে ৭৬ নম্বর বাহেরচর কদমতলা মোল্যা বাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ওই বিদ্যালয়েই বছর যাবৎ পড়া-লেখা করেছে সে। তার মৃত্যুর খবরে সহপাঠী ও শিক্ষকরাও শোকাহত। আজ বিদ্যালয়ে কোনো পাঠদান হয়নি। সহপাঠী ও শিক্ষক সবাই দ্রুত হত্যাকাণ্ডের কারণ ও হত্যাকারীকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে।
ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমান বলেন,এভাবে কোনো শিশুকে হত্যা করা মানা যায় না। দ্রুত হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে শাস্তি দিতে হবে।
সখিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক বলেন, পারিবারিক কোনো বিরোধের কারণে,বা পরিবারের কোনো আত্মীয়-স্বজন কোনো কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে ছেলেটিকে হত্যা করেছে কি না, তা খোঁজা হচ্ছে। পরিবারটিও আমাদের কোনো তথ্য দিতে পারছে না।