কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ রাসেল মাহমুদ নামের (৩৬) এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। পুলিশের দাবি, নিহত রাসেল মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন। নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানার বাসিন্দা তিনি। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের দৈংগাকাটা উজাই অং চাকমার পাহাড়ের পাদদেশে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশের ভাষ্যমতে, ইয়াবা কিনতে এসে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মাদক ব্যবসায়ী রাসেল নিহত হয়েছেন। ওই সময় একটি দেশীয় অস্ত্র (এলজি), শটগানের পাঁচটি তাজা কার্তুজ, নয়টি কার্তুজের খোসা ও পাঁচ হাজার ইয়াবা বড়ি উদ্ধার করা হয়। ঘটনায় পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) বোরহান উদ্দিন ভূঁইয়া, কনস্টেবল হাবিব হোসেন, সজীব সরকার ও তুহিন হাসান আহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তির বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ বন্দর থানায় দুটি মামলা রয়েছে। একটি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে এবং অপরটি আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলা।
প্রথম আলোকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাস। তিনি বলেন, উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের দৈংগাকাটার বাসিন্দা মৃত আবুল হোছনের ছেলে এবং আগ্নেয়াস্ত্র ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন মামলার আসামি আমির হামজার (২৮) বাড়ির সামনে পুলিশের একটি বিশেষ টহল দল পৌঁছালে একদল অস্ত্রধারী পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে। এ সময় পুলিশও আত্মরক্ষার্থে ৩৮টি গুলি ছোড়ে। গোলাগুলির একপর্যায়ে অস্ত্রধারীরা রাতের অন্ধকারে পাহাড়ের জঙ্গলের দিকে পালিয়ে যায়। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এক ব্যক্তিকে বন্দুক ও ইয়াবাসহ আটক করে পুলিশ। তাঁর পকেটে থাকা একটি জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া যায়। ওই কার্ডে তাঁর নাম মো. রাসেল মাহমুদ। বাড়ি নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানার উত্তর লক্ষ্মণঘোনায়। পরে রাসেলকে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই রাসেলের মৃত্যু হয়েছে। তাঁর শরীরে তিনটি গুলির চিহ্ন দেখা গেছে।
ওসি বলেন, নিহত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
গত বছরের ৪ মে থেকে দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশেষ মাদকবিরোধী অভিযান শুরু হয়। এ নিয়ে র্যাব-পুলিশ-বিজিবির সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধ ও এলাকায় মাদকের প্রভাব বিস্তারসহ বিভিন্ন ধরনের ঘটনায় কক্সবাজার জেলায় ১১৩ জন নিহত হয়েছেন। এক রোহিঙ্গা নারীসহ ২৬ রোহিঙ্গা নাগরিক রয়েছেন। এর মধ্যে টেকনাফে ৬৭ ও উখিয়ায় দুজন নিহত হন। বাকিদের বাড়ি ঢাকা, সাভার, নারায়ণগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর, ময়মনসিংহ, মুন্সিগঞ্জ, চুয়াডাঙ্গা ও চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার বাসিন্দা।