কক্সবাজারের টেকনাফে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। তবে তাঁর পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি বিজিবি।
বিজিবি বলছে, নিহত ব্যক্তি ইয়াবা পাচারকারী। ঘটনাস্থল থেকে ২ লাখ ১০ হাজার ইয়াবা, একটি দেশীয় অস্ত্র ও বন্দুকের দুটি খালি খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। বন্দুকযুদ্ধে নিহত ব্যক্তি রোহিঙ্গা বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে টেকনাফের নাফ নদীর ১ নম্বর স্লুইসগেট এলাকায় এই বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ ২ বিজিবির ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ ফয়সল হাসান খান।
বিজিবির এই কর্মকর্তা বলেন, গতকাল রাতে নাফ নদীতে স্পিডবোট নিয়ে বিজিবির একটি বিশেষ দল টহল দিচ্ছিল। এ সময় তাঁরা দেখতে পান, একটি কাঠের নৌকায় করে তিন ব্যক্তি মিয়ানমারের জলসীমা পার হয়ে বাংলাদেশে ঢুকছেন। টহলরত বিজিবির সদস্যরা তাঁদের চ্যালেঞ্জ করলে পাচারকারীরা বিজিবির সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি করেন। আত্মরক্ষার্থে বিজিবিও পাল্টা গুলি করে। এ সময় দুই পাচারকারী নাফ নদীতে ঝাঁপ দিয়ে মিয়ানমার সীমান্তের দিকে চলে যান। পরে ঘটনাস্থলে তল্লাশি করে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় একজনকে পাওয়া যায়। নৌকাসহ তাঁকে উদ্ধার করেন বিজিবির সদস্যরা। গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিকে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তাঁর পরিচয় পাওয়া যায়নি। বিজিবির আহত দুই সদস্যকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক প্রণয় রুদ্র প্রথম আলোকে বলেন, রাত সাড়ে ১২টার দিকে গুলিবিদ্ধ এক ব্যক্তিসহ তিনজনকে বিজিবির সদস্যরা হাসপাতাল আনেন। এর মধ্যে সাদা পোশাকে থাকা ব্যক্তি হাসপাতালে আনার আগেই মারা যান। তাঁর শরীরে তিনটি গুলির চিহ্ন দেখা গেছে।
টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ ফয়সল হাসান খান আরও বলেন, লাশটি টেকনাফ থানা-পুলিশের মাধ্যমে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট আইনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
২০১৮ সালের ৪ মে থেকে সারা দেশে মাদকবিরোধী অভিযান শুরু হয়। তখন থেকে র্যাব, বিজিবি ও পুলিশের সঙ্গে মাদক ব্যবসায়ী, মানব পাচারকারী দালাল চক্র ও ডাকাত দলের এবং মাদক ব্যবসায়ীদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে গোলাগুলির ঘটনায় গত ৩১ জুলাই সকাল পর্যন্ত শুধু কক্সবাজার জেলায় ২৭৩ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে শুধু টেকনাফে বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছেন ১৬২ জন।