চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলায় কিশোরী (১৬) গণধর্ষণের ঘটনার আট মাস পর তিন তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরী এখন আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা। এ ছাড়া সালিস মীমাংসার নামে টাকা নিয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগে স্থানীয় ইউপি সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। স্থানীয় সাংবাদিকদের মাধ্যমে ঘটনাটি জেনে পুলিশ ব্যবস্থা নেয়।
গতকাল শুক্রবার রাতে গ্রেপ্তার করা তিনজনের দুজন ধর্ষণ মামলার আসামি। তাঁরা হলেন ইসমাইল ওরফে ইমরান (২১) ও আরফিন ওরফে আমিনুল (২০)। ইমরান ঢাকায় টাইলস মিস্ত্রি ও আমিনুল থাই মিস্ত্রির কাজ করেন। টাকা নিয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগে ইউপি সদস্য ওয়াহেদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধর্ষণ মামলার আরও দুই আসামি রাব্বি (১৯) ও মেরাজ (২২) পলাতক। এ ঘটনায় আসামি সালিসদার মো. মোস্তফা কামালও পলাতক।
পুলিশ ও গ্রামবাসী সূত্রে জানা যায়, মেয়েটিকে আট মাস আগে গ্রামের চার তরুণ ধর্ষণ করেন। মেয়েটির আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর জানার পর স্থানীয় ইউপির চেয়ারম্যান মো. গিয়াস উদ্দিনের নির্দেশে ২০ দিন আগে ইউপির সদস্য ওয়াহেদুল ইসলাম ও সালিসদার মো. মোস্তফা কামাল বিষয়টি সালিস দরবারের মাধ্যমে ধামাচাপা দিতে ওই চার তরুণের কাছ থেকে ছয় লাখ টাকা আদায় করেন। কিন্তু মেয়েটির পরিবার সেই অর্থ পায়নি। শেষ পর্যন্ত গ্রামবাসীর চাপে পড়ে মেয়েটিকে ওই চার তরুণের একজনকে বিয়ের করার প্রস্তাব দিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হয়। পরে স্থানীয় সাংবাদিকদের মাধ্যমে বিষয়টি পুলিশ জানার পর আইনগত ব্যবস্থা নেয়।
হাজীগঞ্জ থানার পুলিশ গতকাল রাতে ইউপি সদস্য ওয়াহেদুল ইসলাম ও অন্তঃসত্ত্বা মেয়েটিকে থানায় নিয়ে আসে। হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.আলমগীর হোসেনের নির্দেশে ওই চার তরুণসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে মামলা করে মেয়েটি।
ঘটনাটি স্থানীয় ইউপির চেয়ারম্যান জানার পরও আইনগত ব্যবস্থা না নিয়ে স্থানীয়ভাবে সমাধানের নির্দেশ দিলেও তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
হাজীগঞ্জ থানার ওসি মো. আলমগীর হোসেন জানান, এ ঘটনায় পুলিশ মামলা নিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।