মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থানার দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে তরুণীকে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি। তদন্তে সত্যতা পাওয়ার পর অভিযুক্ত দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই তরুণী বাদী হয়ে সোমবার রাতে মামলা করেন।
অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা হলেন, সাটুরিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সেকেন্দার হোসেন ও সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মাজহারুল ইসলাম।
পুলিশ জানায়, ওই তরুণী গত রোববার মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) রিফাত রহমানের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। এর আগে শনিবার রাতে বিষয়টি জানার পর এসপির নির্দেশে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের থানা থেকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়। ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) হাফিজুর রহমানকে প্রধান করে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সোমবার বিকেলে তদন্ত কমিটির সদ্যসরা ওই তরুণী ও এক নারীর সঙ্গে কথা বলেন। এর আগে সাটুরিয়া থানা-পুলিশ তাঁদের (নারী ও তরুণী) আশুলিয়া থেকে মানিকগঞ্জ নিয়ে যায়। তদন্ত কমিটির কাছে তাঁরা ঘটনার বর্ণনা দেন।
তদন্ত শেষে আজ রাত সাতটার দিকে তদন্ত কমিটির প্রধান হাফিজুর রহমান বলেন, সাটুরিয়া থানার দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে সাটুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সাটুরিয়া থানার ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। ওই তরুণী বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার অদূরে আশুলিয়া থানায় কর্মরত থাকা অবস্থায় এসআই সেকেন্দার হোসেনের সঙ্গে আশুলিয়ার এক নারীর পরিচয় হয়। সে সময় পরিবার নিয়ে সেকেন্দার আশুলিয়ায় থাকতেন। একই এলাকায় থাকার সুবাদে সেকেন্দারের সঙ্গে ওই নারীর পারিবারিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এই সম্পর্কের সূত্র ধরে বছর পাঁচেক আগে জমি ব্যবসার জন্য তিনি সেকেন্দারকে এক লাখ টাকা দেন। পরে জমি বিক্রি করে তাঁর অংশের লভ্যাংশসহ তিনি সেকেন্দারের কাছে তিন লাখ টাকা পাওনা হন। তবে দীর্ঘ দিনেও তাঁকে সব টাকা পরিশোধ করা হয়নি। এ কারণে ওই টাকার জন্য তিনি মাঝেমধ্যে সাটুরিয়া থানায় সেকেন্দারের কাছে যেতেন। গত বুধবার বিকেলে পরিচিত এক তরুণীকে সঙ্গে নিয়ে সাটুরিয়া থানায় যান ওই নারী। থানায় যাওয়ার পর সেকেন্দার তাঁদের থানার পাশে জেলা পরিষদের ডাকবাংলোর ভেতরে নিয়ে যান। সেখানে একটি কক্ষে বসে পাওনা টাকার বিষয়ে কথাবার্তা বলার সময় এএসআই মাজহারুল সেখানে উপস্থিত হন। অভিযোগ উঠেছে, এরপর ওই নারীকে একটি কক্ষে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখা হয়। আর তরুণীকে পাশের একটি কক্ষে নিয়ে গিয়ে ওই তাঁরা ধর্ষণ করেন।