নাটোরের বড়াইগ্রামে এক গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় মাতবরেরা অভিযুক্ত ব্যক্তিকে সাতটি জুতার বাড়ি দিয়ে বিচার শেষ করেছেন। একই সঙ্গে অভিযুক্ত ভ্যানচালক বোরহান উদ্দীনের কাছ থেকে জরিমানার অর্থ আদায় করে তা স্থানীয় মাতবরেরা ভাগ-বাঁটোয়ারা করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ১১ আগস্ট দুপুরে ভ্যানচালক বোরহান উদ্দীন এক ব্যক্তির বাড়িতে বাজার থেকে কেনা চাল পৌঁছে দিতে যান। এ সময় ঘরের ভেতরে ঘুমিয়ে থাকা এক গৃহবধূকে (৩২) একা পেয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন বোরহান। ওই গৃহবধূ ঘুম থেকে জেগে চিৎকার শুরু করলে বোরহান দ্রুত ভ্যান নিয়ে পালিয়ে যান। পরে বিষয়টি স্থানীয় গ্রামপ্রধানদের জানালে তাঁরা ভুক্তভোগী পরিবারকে থানায় যেতে নিষেধ করেন। গত মঙ্গলবার রাতে তাঁরা একটি বাড়িতে সালিস বৈঠকে বসেন। সেখানে বোরহানকে সাতটি জুতার বাড়ি দিয়ে বিচার শেষ করা হয়। তবে সালিসে উপস্থিত থাকা ব্যক্তিদের কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বিষয়টি মীমাংসার জন্য অভিযুক্ত বোরহান উদ্দীনের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা আদায় করা হলেও গৃহবধূ বা তাঁর পরিবারকে কোনো টাকা দেওয়া হয়নি। পুরো টাকাই গ্রামপ্রধানেরা ভাগাভাগি করে নিয়েছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ওই গৃহবধূর স্বামী মুঠোফোনে বলেন, ‘গ্রামের প্রধানেরা বসে সবকিছু শুনে বোরহানকে জুতাপেটা করেছেন। তবে আমরা কোনো টাকাপয়সা পাইনি।’ সালিসে উপস্থিত গ্রামপ্রধান মোহাম্মদ কাজল হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলার স্বার্থে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়েছে বলে স্বীকার করেন। ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগের বিচার সালিসে করা যায় কি না এবং টাকা ভাগাভাগির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তরা (ওসি) দিলীপ কুমার দাস বলেন, ‘বিষয়টি জানা ছিল না। তা ছাড়া ভিকটিমের পরিবারও কিছু জানায়নি। তবে আমি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।’