দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার দক্ষিণ খট্টামাধবপাড়া গ্রামে দুর্বৃত্তদের ছোড়া অ্যাসিডে মোরশেদা বেগম (২১) নামের এক গৃহবধূর বাঁ চোখ, মুখমণ্ডলসহ শরীরের বেশ কিছু অংশ ঝলসে গেছে। গত সোমবার রাতের এ ঘটনায় মোরশেদার স্বামী ইলিয়াস আলী বাদী হয়ে প্রতিবেশী বাবুল হোসেনসহ আটজনকে আসামি করে ওই রাতে হাকিমপুর থানায় মামলা করেন। রাতেই বাবুল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোরশেদা গতকাল মঙ্গলবার সকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, দক্ষিণ খট্টামাধবপাড়া গ্রামে তাঁর স্বামীর বাড়ি। সোমবার রাত সাড়ে আটটার সময় তিনি ঘরের কাজ করছিলেন। তখন বিদ্যুৎ ছিল না। হঠাৎ কেউ একজন জানালা দিয়ে পানির মতো কিছু তাঁর শরীরে ছুড়ে মারে। এতে প্রচণ্ড জ্বালায় তিনি চিৎকার দিতে থাকেন। বাড়ির লোকজন দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে শরীরের পুড়ে যাওয়া অংশে বেশ কিছু সময় ধরে পানি দেন। পরে তাঁকে হাকিমপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, মোরশেদা বেগমের মুখের বাঁ অংশ পুরোটাই ঝলসে গেছে। বাঁ চোখের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ ছাড়া ডান চোখের নিচের অংশ, ডান হাতের কবজি ও ডান পায়ের গোড়ালি ঝলসে গেছে। চোখটির অবস্থা খারাপ হওয়ায় মোরশেদাকে পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, মোরশেদার শরীরের ৫ থেকে ৭ শতাংশ পুড়ে গেছে।
মোরশেদার স্বামী ইলিয়াস আলীর অভিযোগ, ছয় মাস আগে প্রতিবেশী বাবুল হোসেন তাঁর (ইলিয়াস) বাড়ির পাশ ঘেঁষে একটি পাকা নালা তৈরি করতে চান। এতে রাজি না হওয়ায় বাবুল খেপে যান। পরে গত ঈদে তিনি নিজের বাড়িতে পল্লি বিদ্যুতের সংযোগ নিতে চাইলে বাবুল তাতে বাধা দেন। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে বিরোধ চলছে। বিরোধের জের ধরে বাবুল ও তাঁর সহযোগীরা মোরশেদাকে প্রায়ই অ্যাসিডে ঝলসে দেওয়ার হুমকি দিতেন।
হাকিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, বাবুলকে মঙ্গলবার দুপুরে দিনাজপুর আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।