দুদক চেয়ারম্যানের প্রতিনিধিসহ চারজনকে হাইকোর্টে তলব

তিন বছর ধরে কারাগারে রয়েছেন নিরীহ জাহালম
তিন বছর ধরে কারাগারে রয়েছেন নিরীহ জাহালম

সোনালী ব্যাংকের সাড়ে ১৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় গ্রেপ্তার পাটকলশ্রমিক জাহালমের আটকাদেশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে জাহালমের গ্রেপ্তারের ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে দুদক চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি, মামলার বাদী দুদক কর্মকর্তা, স্বরাষ্ট্রসচিবের প্রতিনিধি ও আইনসচিবের প্রতিনিধিকে আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টায় সশরীরে আদালতে হাজির থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আজ সোমবার এই আদেশ দেন।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অমিত দাশ গুপ্ত প্রথম আলোকে বলেন, আজ প্রথম আলোয় প্রকাশিত ‘স্যার, আমি জাহালম, সালেক না…’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রথম আলোর এই প্রতিবেদনটি তিনি আদালতের নজরে আনেন। শুনানি নিয়ে আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে জাহালমের আটকাদেশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। চার সপ্তাহের মধ্যে এই রুলের জবাব দিতে বলেছেন হাইকোর্ট।

প্রকৃত আসামি আবু সালেক। ছবি: সংগৃহীত

অমিত দাশ গুপ্ত আরও বলেন, প্রকৃত আসামিকে খুঁজে বের না করে কেন নিরীহ শ্রমিক জাহালমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে? এ ঘটনার ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য দুদকের চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি, মামলার বাদী, স্বরাষ্ট্রসচিবের প্রতিনিধি এবং আইনসচিবের প্রতিনিধিকে আদালতে হাজির থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অমিত দাশ গুপ্ত জানান, জাহালমের আটকাদেশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, এই রুলের জবাব দেওয়ার জন্য দুদক চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি, স্বরাষ্ট্রসচিব, আইনসচিব, মামলার বাদী, সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

শুনানির সময় রাষ্ট্রপক্ষে আদালতে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আবু সালেকের বিরুদ্ধে সোনালী ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির ৩৩টি মামলা হয়েছে। কিন্তু আবু সালেকের বদলে জেল খাটছেন, আদালতে হাজিরা দিয়ে চলেছেন এই জাহালম।

জাহালমের কারাবাসের তিন বছর পূর্ণ হবে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি। দুদক এখন বলছে, জাহালম নিরপরাধ প্রমাণিত হয়েছেন। তদন্ত করে একই মত দিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনও। তাই একটি মামলায় তাঁর জামিন হয়েছে। আরও ৩২টি মামলায় জামিন পাওয়ার অপেক্ষায় আছেন তিনি।