সেতু থেকে দুই শিশু সন্তানের সামনে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছেন এক নারী। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে বাগেরহাট ও গোপালগঞ্জ জেলার সীমান্তবর্তী মধুমতী নদীর ওপর নির্মিত শেখ লুৎফর রহমান সেতু থেকে এই নারী আত্মহত্যার জন্য নদীতে ঝাঁপ দেন।
খবর পেয়ে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া ফায়ার সার্ভিস ও খুলনার স্টেশনের ডুবুরি দল নদীতে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। কিন্তু তাঁকে পাওয়া যায়নি। আলোর অভাবে আজ উদ্ধার অভিযান স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। সেতুটির এক পাশে বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলা আর অপর পাশে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলা।
নিখোঁজ ওই নারীর নাম আফরোজা খান (২৩)। তিনি গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়া উপজেলার সোনারগাতী গ্রামের প্রবাসী অলিউর জামানের স্ত্রী।
ওই নারীকে নদীতে লাফ দিতে দেখা প্রত্যক্ষদর্শী বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার চিংগুড়ি গ্রামের ইউসুফ মুন্সি বলেন, ঘটনার সময় তিনি ওই সেতু দিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় অনেক লোকজনই ছিলেন। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগে এক নারী সেতু থেকে নদীতে লাফিয়ে পড়েন। তাঁর সঙ্গে থাকা দুটি শিশু এ সময় চিৎকার করলে লোকজন ছুটে আসে।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, ব্যাটারিচালিত একটি ইজিবাইকে করে বোরকা পরা এক নারী দুই শিশুসহ সেতুতে এসে নামেন। কিছুক্ষণ সেখানে দাঁড়িয়ে ওই নারী তাঁর সন্তানদের কাছে ব্যাগ ও মুঠোফোন রেখে নদীতে ঝাঁপ দেন।
ওই নারীর ভাই মোহাম্মদ উল্লাহ বলেন, নানা বিষয় নিয়ে তাঁর বোন ও ভগ্নিপতির মধ্যে কলহ চলছিল। বিদেশ থেকে তিনি ঠিকমতো টাকাও দিতেন না। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে ঝগড়া লেগে ছিল। অসচ্ছলতাসহ সাংসারিক সমস্যার কারণে তাঁর বোন আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। তাঁদের একটি ছেলে ও একটি মেয়ে। তারা এখন তাদের খালার কাছে আছে।
টুঙ্গিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ এফ এম নাসিম বলেন, ‘আমরা যত দূর জানতে পেরেছি পারিবারিক কলহের জেরে আফরোজা সেতু থেকে লাফিয়ে পড়েন।’
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স গোপালগঞ্জ কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক জানে আলম প্রথম আলোকে বলেন, খবর পেয়ে আমাদের টুঙ্গিপাড়া ও খুলনার ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত তাঁকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। আলো না থাকায় রাতে উদ্ধার অভিযান স্থগিত রাখা হয়েছে। কাল বুধবার সকাল থেকে আবারও উদ্ধার অভিযান শুরু করা হবে।