বরগুনার বামনা উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রিপন হাওলাদারের (৩৮) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে সোনাখালী গ্রামের একটি ডোবা থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়। পরিবারের দাবি, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
নিহত রিপন উপজেলার সোনাখালী গ্রামের রশিদ হাওলাদারের ছেলে।
স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিহত যুবলীগ নেতা রিপন হাওলাদারের সঙ্গে চাচা চান মিয়া হাওলাদার, আবদুল সহিদ হাওলাদার ও সৎভাই ইলিয়াস হাওলাদারের জমিজমাসংক্রান্ত বিরোধ ছিল। এ বিরোধে সৎভাই ও চাচাদের আসামি করে একটি মামলা চলছে। এই মামলায় সৎভাই ইলিয়াস হাওলাদার (৪২) বরগুনা জেলা কারাগারে ছিলেন। গতকাল রোববার তিনি জামিনে মুক্তি পান।
রিপন হাওলাদারের পরিবারের অভিযোগ, জামিনে মুক্ত হয়ে ইলিয়াস হাওলাদার তাদের হুমকি দিয়েছেন। রিপন হত্যায় তিনি জড়িত থাকতে পারেন। রিপন ইজিবাইকচালক ছিলেন। গতকাল রাত ১২টার দিকে বাড়ির সামনে সড়কের পাশে ইজিবাইকের ব্যাটারি চার্জ দিতে যান। এরপর আর বাড়ি ফিরে আসেননি।
পরিবারের লোকজন জানান, আজ সকালে ইজিবাইকে যাত্রী নিয়ে ফুলঝুড়ি খেয়াঘাটে যাওয়ার কথা ছিল রিপনের। সকালে রিপনকে ফোনে না পেয়ে তাঁর বাবা রশিদ হাওলাদারকে ফোন দেন যাত্রীদের একজন। বাবা ঘরে গিয়ে ছেলেকে না পেয়ে বিভিন্ন স্থানে খুঁজতে থাকেন। সকাল সাতটার দিকে রিপনের মা রিজিয়া বেগম বাড়ির পাশে ডোবায় ছেলের লাশ ভেসে থাকতে দেখে চিৎকার দেন। এ সময় পরিবারের অন্য সদস্যরা সেখানে ছুটে যান। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
রিপনের মা রিজিয়া বেগমের অভিযোগ, জমিজমাসংক্রান্ত বিরোধের জেরে তাঁর ছেলেকে হত্যা করে ডোবায় লাশ ফেলে দেওয়া হয়েছে।
নিহত রিপনের ছোট ভাই সেলিম হাওলাদার বলেন, জমিজমাসংক্রান্ত বিরোধের মামলায় সৎভাই মো. ইলিয়াস হাওলাদার বরগুনা জেলা কারাগার থেকে গতকাল জামিনে মুক্ত হয়ে তাদের হুমকি দেওয়া শুরু করেন। হত্যার ঘটনায় তাঁর যোগসাজশ থাকতে পারে বলে তিনি মনে করেন।
বামনা সদর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব কুমার বলেন, নিহত রিপন হাওলাদার দলের একজন একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন। তাঁর এই রহস্যজনক মৃত্যু কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। ঘটনাটি সঠিকভাবে তদন্ত করতে পুলিশের প্রতি দাবি জানান তিনি।
বামনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে লাশের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।