দুই শিশু হত্যায় সন্দেহভাজন মোস্তফার স্ত্রী-শ্যালক আটক

ফারিয়া আক্তার দোলার মা পারভিন আক্তারের আহাজারি। শাহ জালাল রোড, কোনাপাড়া, ডেমরা। ছবি: দীপু মালাকার
ফারিয়া আক্তার দোলার মা পারভিন আক্তারের আহাজারি। শাহ জালাল রোড, কোনাপাড়া, ডেমরা। ছবি: দীপু মালাকার

রাজধানীর ডেমরায় দুই শিশু হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তি মোস্তফার স্ত্রী ও শ্যালককে আটক করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার তাঁদের আটক করে ডেমরা থানায় নেওয়া হয়।

ডেমরায় একটি ফ্ল্যাট থেকে গতকাল সোমবার দুটি শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। শিশু দুটি গতকাল দুপুর থেকে নিখোঁজ ছিল। রাত নয়টার দিকে তাদের লাশ পাওয়া যায়।

নিহত দুই শিশুর নাম ফারিয়া আক্তার দোলা (৫) ও নুসরাত জাহান (৪)।

প্রতিবেশী শিশু দুটির পরিবার ডেমরার কোনাপাড়ার হজরত শাহ জালাল রোডে টিনশেড ও পাকা ভবনের পৃথক দুটি বাসায় থাকে।

নুসরাত জাহানের মা ফাহিমা বেগমের আহাজারি। শাহ জালাল রোড, কোনাপাড়া, ডেমরা। ছবি: দীপু মালাকার

নিহত দোলার চাচা রাশেদুল ইসলামের ভাষ্য, গতকাল দুপুরে খেলা করার পর থেকে শিশু দুটিকে পাওয়া যাচ্ছিল না। খোঁজাখুঁজি শেষে তাদের না পেয়ে এলাকায় মাইকিং করা হয়। যখন মাইকিং করা হচ্ছিল, তখন এলাকার এক যুবক তাঁদের বলেন, স্থানীয় মোস্তফা নামের এক ব্যক্তি দুপুরের পর শিশু দুটিকে ডেকে তাঁর ফ্ল্যাটে নিয়ে যান।

রাশেদুল বলেন, যুবকের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে মোস্তফার খালা সেই ফ্ল্যাটে যান। তিনি শিশু দুটিকে পড়ে থাকতে দেখেন। এ সময় মোস্তফা যাতে ঘর থেকে বের হতে না পারেন, সে জন্য তিনি (খালা) বাইরে থেকে তালা দিয়ে আশপাশের লোকজনকে খবর দেন। তবে লোকজন এসে মোস্তফাকে ঘরে পাননি।

রাশেদুলের ধারণা, মোস্তফা হয়তো কৌশলে পালিয়ে যান।

দুই শিশুর হত্যাকারীর ফাঁসির দাবিতে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ মিছিল। কোনাপাড়া এলাকা, ডেমরা। ছবি: দীপু মালাকার

এলাকাবাসী জানায়, মোস্তফা পেশায় পোশাকশ্রমিক। তিনি স্ত্রী ও এক শিশুসন্তান নিয়ে ওই ফ্ল্যাটে সাবলেট থাকতেন।

ডেমরা থানার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিক বলেন, ‘খুব দ্রুত মোস্তফাকে আটক করা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।’

মোস্তফার স্ত্রী ও শ্যালককে আটক করার বিষয়ে ওসি সিদ্দিক বলেন, ‘আমরা তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করছি। কোথায় কখন এ ঘটনা ঘটল—এ বিষয়ে তাঁদের কাছে কোনো তথ্য আছে কি না, জানার চেষ্টা করছি।’

নিহত শিশু দোলার বাবা ফরিদুল ইসলাম আজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘কেন শিশু দুটিকে হত্যা করা হলো, এর কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছি না। মোস্তফার সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক ছিল না। এমনকি নিহত আরেক শিশু নুসরাতের পরিবারের সঙ্গেও আমাদের কোনো আলাপ ছিল না।’