দিনাজপুরের পার্বতীপুরে রেলওয়ের জ্বালানি তেলবাহী ট্রেনের ইঞ্জিনের তেল চুরি করে বিক্রির সময় লোকোমোটিভের চালক, সহকারী চালক ও চোরাই তেলের ক্রেতাসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে। গতকাল রোববার বিকেলে পার্বতীপুর রেলস্টেশনের আউটার সিগন্যালের কাছে হলদিবাড়ী রেল গেটে হাতেনাতে তাঁদের আটক করেন পার্বতীপুর রেলওয়ে নিরাপত্তা গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্যরা।
আটক তিনজন হলেন লোকোমোটিভের চালক মো. সেলিম (৩৮), সহকারী চালক মো. উজ্জল হোসেন (২৮) ও চোরাই তেলের ব্যবসায়ী মো. হাছান আলী।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, পিকে ৭ আপ জ্বালানি তেলবাহী ট্রেন (ইঞ্জিন নং ৬৩১২) খুলনা থেকে পার্বতীপুরে আসছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পার্বতীপুর রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর গোয়েন্দা সদস্যরা আগে থেকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। বিকেলের দিকে ইঞ্জিন থামিয়ে ২১০ লিটার তেলসহ (বিশেষ ধরনের পলিথিনের বস্তা ভর্তি) হাতেনাতে তিনজনকে আটক করা হয়।
অভিযোগ রয়েছে, পার্বতীপুরে দীর্ঘদিন থেকে সিন্ডিকেটভিত্তিক তেল চুরি ও পাচার হয়ে আসছিল। তেলবাহী গাড়ির ইঞ্জিন ছাড়াও যাত্রীবাহী লোকাল, মেইল ও আন্তঃনগর ট্রেনের ইঞ্জিন থেকেও তেল চুরির ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া সান্টিং ইঞ্জিন থেকেও তেল চুরি হয়ে আসছে মাসের পর মাস।
জানতে চাইলে পার্বতীপুর ডিজেল সেডের লোকো ইনচার্জ মো. কাফিউল ইসলাম বলেন, তেলবাহী গাড়িটি খুলনা থেকে পার্বতীপুর এসে পৌঁছে। দুই স্টাফ লোকোমোটিভটি (ইঞ্জিন) ঈশ্বরদী থেকে চার্জ নিয়ে (দায়িত্ব) পার্বতীপুর আসেন। তিনি দাবি করেন, 'আসলে তেল কখনোই চুরি হয় না। দক্ষ চালক তাঁর প্রাপ্ত রেশন থেকে যে পরিমাণ তেল বাঁচান, তা বাইরে ফেলে দেন অথবা একটি সংঘবদ্ধ তেল চোরের কাছে বিক্রি করে দেন।' তিনি আরও বলেন, রেশনে পাওয়া তেল চালক তাঁর দক্ষতা দিয়ে বাঁচালেও পুরষ্কৃত করার বিধান না থাকায় তাঁরা এর অপব্যবহার করেন। অন্যদিকে চালকেরা কোনো কারণে রেশনের অতিরিক্ত তেল খরচ করলে তাদের জরিমানা দিতে হয়।
পার্বতীপুরে কর্মরত রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর ইনচার্জ এমদাদুল হক বলেন, ইঞ্জিন থেকে তেল চুরি করে বিক্রির সময় রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা তিনজনকে আটক করেন। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।