কক্সবাজারের টেকনাফে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। বিজিবি বলছে, নিহত দুজন ইয়াবা পাচারকারী ছিলেন।
গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে টেকনাফের জাদিমোরাসংলগ্ন শিকলগাড়ার নাফ নদীর তীরে এই ঘটনা ঘটে। এই তথ্য প্রথম আলোকে জানান টেকনাফ ২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ ফয়সল হাসান খান।
নিহত দুই ব্যক্তি হলেন মো. জাবেদ মিয়া (৩৪) ও মো. আসমাউল সওদাগর (৩৫)। জাবেদ যশোরের কোতোয়ালির বসুন্দিয়ার মো. জব্বার আলীর ছেলে। আর আসমাউল চাঁদপুরের দক্ষিণ মতলবের চরমুকুন্দীর মো. রেজোয়ান সওদাগরের ছেলে।
বিজিবির ভাষ্য, ঘটনাস্থল থেকে একটি দেশীয় অস্ত্র (এলজি), তিনটি তাজা গুলি ও ১০ হাজার ইয়াবা বড়ি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় বিজিবির তিন সদস্য আহত হয়েছেন।
টেকনাফ ২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ ফয়সল হাসান খান বলেন, গতকাল রাতে টেকনাফের জাদিমোরার নাফ নদীসংলগ্ন শিকলগাড়ার এলাকা দিয়ে মিয়ানমার থেকে ইয়াবার একটি বড় চালান বাংলাদেশে আসছে বলে তথ্য পাওয়া যায়। এই তথ্যের সূত্র ধরে দমদমিয়া বিজিবির একটি টহল দল ওই এলাকায় যায়। তারা কয়েকজন ব্যক্তিকে অন্ধকারের মধ্যে নাফ নদীর তীর থেকে উঠে আসতে দেখে। তারা নদী থেকে খালে ঢুকলে বিজিবির টহল দল চ্যালেঞ্জ করে। বিজিবিকে লক্ষ্য করে সশস্ত্র ইয়াবা পাচারকারীরা গুলি ছোড়ে। এতে বিজিবির তিন সদস্য মো. মতিউর রহমান, ইমরান হোসেন ও মো. রেজাউল আহত হন। বিজিবিও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছোড়ে। পরে সংঘবদ্ধ মাদক পাচারকারীরা পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দুই মাদক পাচারকারীকে উদ্ধার করা হয়। দুজনের শরীরের সঙ্গে বাঁধা অবস্থায় ১০ হাজার ইয়াবা বড়ি পাওয়া যায়। গুলিবিদ্ধ মাদক পাচারকারীদের টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাঁদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। কক্সবাজারে নেওয়ার পথে তাঁরা মারা যান।
টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে চিকিৎসক শোভন দাস প্রথম আলোকে বলেন, রাতে বিজিবি পাঁচজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। তাঁদের মধ্যে তিনজন বিজিবির সদস্য। বাকি দুজন বেসামরিক লোক। বিজিবির সদস্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। আর অন্য দুজনকে (জাবেদ ও আসমাউল) কক্সবাজারে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। তাঁদের বুকে ও পিঠে গুলির একাধিক চিহ্ন দেখা গেছে।
বিজিবি জানায়, জাবেদ ও আসমাউলের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গের রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা করার প্রক্রিয়া চলছে।
গত বছরের ৪ মে থেকে দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশেষ মাদকবিরোধী অভিযান শুরু হয়। এ নিয়ে র্যাব-পুলিশ-বিজিবির সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধ’ ও এলাকায় মাদকের প্রভাব বিস্তারসহ নানা ঘটনায় কক্সবাজার জেলায় ১৩৩ জন নিহত হয়েছেন।