কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় একজন ইয়াবা কারবারি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন পুলিশ। নিহত ব্যক্তির নাম আবুল কাশেম (৩২)। তিনি উপজেলার সদর ইউনিয়নের মহেশখালিয়াপাড়ার বাসিন্দা ফজল আহমদের ছেলে।
পুলিশের ভাষ্যমতে, নিহত ব্যক্তি একজন মাদক ব্যবসায়ী। তাঁর বিরুদ্ধে থানায় দুটি মামলা রয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি দেশীয় এলজি, ছয়টি গুলি ও ১০ হাজার ইয়াবা বড়ি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) কাজী সাইফুদ্দিন, কনস্টেবল মোহাম্মদ মামুন মিয়া ও কামরুল হাসান আহত হয়েছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে টেকনাফ উপজেলার সদর ইউনিয়নের মহেশখালিয়াপাড়া মৎস্যঘাট ও টেকনাফ-কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভসংলগ্ন এলাকায় এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।
এ তথ্য প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাস।
ওসি বলেন, গতকাল রাত আনুমানিক ১২টার দিকে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে, টেকনাফ উপজেলার সদর ইউনিয়নের মহেশখালিয়াপাড়া মৎস্যঘাট ও মেরিন ড্রাইভ এলাকায় ইয়াবা ব্যবসায়ীদের মধ্যে ইয়াবা বণ্টনকে কেন্দ্র করে গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে। থানা-পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছালে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এতে পুলিশের তিন সদস্য আহত হন। পরে পুলিশ পাল্টা গুলি ছোড়ে। উভয় দলের মধ্যে কয়েক মিনিট গোলাগুলি চলে। এরপর কয়েকজন ইয়াবা ব্যবসায়ী পিছু হটে। পরে ওই স্থানে তল্লাশি চালিয়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় একজন, একটি এলজি, ছয়টি তাজা কার্তুজ ও ১০ হাজার ইয়াবা বড়ি উদ্ধার করা হয়েছে।
পরে গুলিবিদ্ধ ব্যক্তি ও পুলিশের তিন সদস্যকে উদ্ধার করে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মোহাম্মদ নাসিম প্রথম আলোকে বলেন, সাধারণ পোশাকে থাকা ব্যক্তির অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁর শরীরের তিনটি গুলির চিহ্ন রয়েছে। পোশাকে থাকা পুলিশের তিনজন সদস্যকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সকালে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আর উন্নত চিকিৎসার জন্য সাধারণ পোশাকে থাকা ব্যক্তিকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ওসি প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তাঁর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
২০১৮ সালের ৪ মে থেকে সারা দেশে মাদকবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর র্যাব, বিজিবি, পুলিশ, মাদক ব্যবসায়ীদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, মানব পাচারকারী দালাল চক্র ও ডাকাত দলের সঙ্গে গোলাগুলির ঘটনায় আজ শুক্রবার সকাল পর্যন্ত চারজন নারীসহ শুধু কক্সবাজার জেলায় ২৫১ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুই নারীসহ ৯৩ জন রোহিঙ্গা নাগরিক রয়েছেন।