চট্টগ্রাম নগরের কর্ণফুলী শিকলবাহা এলাকা থেকে রায়হানুল ইসলাম নামের এক প্রবাসীর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় করা মামলায় তিন দিনের মধে৵ রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে খুনের ঘটনা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন গ্রেপ্তার দুই আসামি। টাকার জন্য প্রবাসী রায়হানকে খুন করার কথা স্বীকার করেন তাঁরা।
রায়হান সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে থাকতেন। গত নভেম্বর মাসে তিনি দেশে আসেন। জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে তাঁর বিয়ের দিন ঠিক করা ছিল। বিয়ের দাওয়াত দেওয়ার জন্য তিনি বাকলিয়া এলাকায় বোনের বাসায় যান। সেখান থেকে নগরের গরিব উল্লাহ শাহ এলাকার বাসায় ফেরার কথা ছিল ১৭ জানুয়ারি। কিন্তু সেদিন রাতে বাসায় না ফেরায় তাঁকে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। পরে কর্ণফুলী শিকলবাহা এলাকায় একটি লাশ পড়ে থাকার খবর পেয়ে তাঁর পরিবারের সদস্যরা লাশটি শনাক্ত করেন। এই ঘটনায় তাঁর বাবা আতাউর রহমান বাদী হয়ে কর্ণফুলী থানায় হত্যা মামলা করেন।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (বন্দর) আরেফিন জুয়েল প্রথম আলোকে বলেন, মামলাটির তেমন কোনো ক্লু (সূত্র) ছিল না। প্রযুক্তির সাহায্যে সোমবার রাতে পুলিশ দুই আসামি সুমি আক্তার ও বাদশা মিয়াকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা রায়হানকে খুন করার কথা স্বীকার করেন। পরে তাঁদের আদালতে হাজির করা হলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) কাজী শাহাবুদ্দিন আহমেদ বলেন, জবানবন্দি দেওয়ার পর দুই আসামিকে আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইসমাইল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, প্রবাসী রায়হানের সঙ্গে সুমি আক্তারের দীর্ঘদিন থেকে যোগাযোগ ছিল। দেশে ফেরার পর দুজনের দেখা হয়। ঘটনার দিন সুমি আক্তারের বাসায় আসার জন্য রাতে যোগাযোগ হয়। দুজনের কথা আগে থেকেই জানতেন সুমির স্বামী। ঘটনার দিন নগরের মইজ্জারটেক এলাকা থেকে রায়হানকে আনতে যান সুমির স্বামী সেলিম। এই ফাঁকে তিনি আরও ছয়জনকে দলে টানেন। একপর্যায়ে রায়হানের কাছে ১৫ লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকার করায় গলায় গামছা পেঁচিয়ে খুন করা হয় তাঁকে। গ্রেপ্তার আসামিদের মধে৵ বাদশা সিএনজিচালক। পলাতক বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।