জেলা পরিষদ মার্কেটের সামনের জায়গা দখল করে ব্যবসা

নন্দীপাড়ায় জেলা পরিষদ মার্কেটে যাওয়ার পথ বন্ধ। সামনে সড়ক দখল করেছে অবৈধ কাঁচাবাজার। ছবিটি গতকালের l প্রথম আলো
নন্দীপাড়ায় জেলা পরিষদ মার্কেটে যাওয়ার পথ বন্ধ। সামনে সড়ক দখল করেছে অবৈধ কাঁচাবাজার। ছবিটি গতকালের l প্রথম আলো

দখল হয়ে গেছে রাজধানীর পূর্বাঞ্চলীয় এলাকা নন্দীপাড়া জেলা পরিষদ মার্কেটের সামনের সড়কের জায়গা। সেখানে মাচা বেঁধে গড়ে তোলা হয়েছে ৪০টির মতো দোকান। ফলে ১২ ফুট চওড়া সড়ক সরু এবং ড্রেনেজ লাইন বন্ধ হয়ে গেছে।
গতকাল রোববার এলাকা ঘুরে এ অবস্থা দেখা গেছে। সামনে বেমানানভাবে কাঁচাবাজার বসে যাওয়ায় ‘নন্দীপাড়া বাণিজ্যিক বিপণি’ নামের এই মার্কেটের তালিকাভুক্ত নিজস্ব দোকানগুলোতে সহজ চলাফেরা প্রায় বন্ধ। প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কারণে মার্কেটের মূল দোকানমালিকদের চুপ করে থাকতে হয় বলেও অভিযোগ করেছেন কয়েকজন দোকানি। ভারী বৃষ্টি হলে এখানে সড়কে পানি জমে যায়। কারণ, এখানে সরকারিভাবে যে ড্রেনেজ লাইনটি নির্মাণ করা হয়েছে, বাজারের শাকসবজির অংশ এবং আবর্জনায় সেটি বন্ধ হয়ে গেছে।
মার্কেটের সামনের দোকানগুলোতে নিয়মিত চাঁদাবাজির অভিযোগও পাওয়া যায়। বিক্রিবাট্টা কম হওয়ায় মূল দোকানগুলোর কিছু মালিক বাধ্য হয়ে নিজেরাও সামনের জায়গা ভাড়া দিয়েছেন বলে জানা যায়।
বিভিন্ন ধরনের সবজি ছাড়াও চাল, ডাল, আটা, আদা, রসুন, মরিচ, পেঁয়াজ থেকে শুরু করে মুদি দোকানের সবই বিক্রি হচ্ছে এখানে।
মূল মার্কেটের কয়েকজন দোকানি অভিযোগ করেন, তাঁদের দোকানের সামনের জায়গায় কাঁচাবাজারের বিরুদ্ধে আপত্তি জানালে মার্কেটের ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও তাঁর কাছের নেতারা উল্টো তাঁদেরই ধমক দিয়ে থামিয়ে দেন। সাধারণ সম্পাদক এও বলেছেন যে, নিজেদের দোকান নিয়ে তাঁরা থাকুন, ফুটপাতের বিষয়ে তাঁদের মাথা ঘামাতে হবে না।
প্রতি মাসে এসব দোকান থেকে চাঁদা উঠিয়ে পুলিশকে দেওয়া হয় বলে এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়। মার্কেটের একাধিক নেতাও এর সঙ্গে জড়িত। কাঁচাবাজারের কয়েকজন দোকানি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মাসে প্রায় তিন হাজার টাকা তাঁদের থেকে নেওয়া হয়।
সাধারণত রাস্তার দোকানে জিনিসপত্র তুলনামূলক কম দামে পাওয়া যায়। রাস্তা দখল করে বসা দোকানিরা কম লাভে বিক্রি করেন না কেন—এই প্রশ্নের জবাবে পাঁচজন বিক্রেতা বলেন, চারদিকে টাকা দিতে গিয়ে তাঁদের লাভ থাকে খুবই কম।
সড়কের জায়গা দখল করে ব্যবসা করার বিষয়ে ওই দোকানিরা বলেন, ভবিষ্যতে তাঁদের দোকান দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। তা ছাড়া এখানে না বসলে তাঁদের অন্য কোনো সড়কের জায়গায় বসতেই হবে।
যোগাযোগ করা হলে নন্দীপাড়া বাণিজ্যিক বিপণি ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জুনায়েদ হোসেন খান বলেন, সড়ক দখল করে গড়ে ওঠা দোকানগুলোর বিক্রেতাদের সঙ্গে তাঁর কোনো সখ্য নেই। তিনি চাঁদাবাজির বিষয়েও কিছু জানেন না। তিনি বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সঙ্গে এই এলাকার অন্তর্ভুক্তির গেজেট বেরিয়ে গেলে সড়ক বড় হবে। তখন এসব দোকান এমনিতেই উঠে যাবে। তিনি বলেন, মার্কেটের বড় দোকানিরা ছয় হাজার টাকায় তাঁদের সামনের জায়গা ভাড়া দিয়েছেন।
এলাকাটি দক্ষিণগাঁও ইউনিয়নের অধীন। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সোহরাওয়ার্দী প্রথম আলোকে বলেন, এখানে কিছু লোক চাঁদাবাজি করেন—এমন অভিযোগ তাঁর কাছেও আসে। তবে ইউনিয়ন পরিষদের কেউ এর সঙ্গে জড়িত নন।