ছাগল ছিনতাই-চেষ্টায় অভিযুক্ত মোহাম্মদপুর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি মুজাহিদুল আজমীসহ ছয়জন পালিয়ে গেছেন। এই ভাষ্য পুলিশের। তবে স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, তাঁদের গ্রেপ্তারে পুলিশের কোনো উদ্যোগই নেই।
১১ আগস্ট যশোরের বারোবাজার পশুরহাট ও ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে ২১২টি ছাগলসহ পাঁচ ব্যবসায়ীকে জিম্মি করার অভিযোগ ওঠে কিছু তরুণের বিরুদ্ধে। ঘটনাস্থল থেকে তিন তরুণকে গ্রেপ্তারের পর র্যাব ছাগল, ট্রাক, ওয়াকিটকিসহ তাঁদের থানায় সোপর্দ করে। ওই তিনজন এখন কারাগারে। তবে খোঁজ নেই বাকি ছয়জনের।
মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শরিফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, অভিযুক্তরা গা ঢাকা দিয়েছেন। তাঁদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে। মোহাম্মদপুর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি মুজাহিদুল আজমী কোথায় জানতে চাইলে তিনি কোনো জবাব দেননি। প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তিনজন এক দিনের রিমান্ডে ছিলেন। পরে তাঁদের জেলহাজতে পাঠিয়েছেন আদালত। টেলিযোগাযোগ আইনেও তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে এবং রিমান্ড প্রার্থনা করা হয়েছে। আদালতের আদেশ পাওয়া গেলেই তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
মামলার বাদী সাইফুল ইসলাম গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের অর্ধেক ছাগল এখনো বিক্রি হয়নি। তাঁরা মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। ওই দিনের ঘটনা সম্পর্কে তিনি বলেন, ১০ আগস্ট রাত ১২টায় তাঁদের ট্রাক ঢাকায় পৌঁছায়। সে সময় ছাগলের ট্রাকে ছিলেন চালক, তাঁর সহকারী ও দুই আড়তদার। তিনি ছিলেন যাত্রাবাড়ীতে। ওখানকার হাটে ছাগলগুলো নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শ্যামলী শিশুমেলার সামনে তাঁদের পথরোধ করে দাঁড়ান ১০–১২ জন তরুণ। হাতে ওয়াকিটকি দেখে তাঁরা মনে করেন, তরুণেরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য। মুঠোফোনে খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে আসেন। রাত তিনটা পর্যন্ত তাঁরা বিভিন্ন সূত্রের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। তাঁরা ৯৯৯–এ ফোনও করেন। কিন্তু পুলিশের কোনো সহযোগিতা পাননি। পরদিন বেলা তিনটায় র্যাবের ম্যাজিস্ট্রেট এসে তাঁদের উদ্ধার করেন।
স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, মুজাহিদুল আজমী গত বছরও টাউন হল বাজারে পশুর অবৈধ হাট বসিয়েছিলেন। সে সময়ও তাঁর বিরুদ্ধে কোরবানির পশু আটক করে হাটে বিক্রি করানোর অভিযোগ উঠেছিল। তবে সে সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এ বিষয়ে জানতে মুজাহিদুল আজমীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে গতকাল রাতে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।