চুরি করার জন্য একজন পিকআপ ভ্যান ভাড়া দেন। মহাজন ভ্যানের ভাড়া, তেল ও রাস্তার খরচ বাবদ টাকা দেন। চুরির পর সেই টাকা ভাগ হয়। দুই ভাগ পান মহাজন ও ভ্যানের মালিক। বাকি টাকা চোরচক্রের সদস্যরা। এই চক্রের সদস্য হতে মহাজনকে ৫-১০ হাজার টাকা করে ফি দিতে হয়।
চোরেরা পিকআপ ভ্যান নিয়ে দিনের বেলা বেরিয়ে পড়েন। জেলায় জেলায় ঘোরেন। কোন দোকানে চুরি করা যায়, তা রেকি করেন। রাতে তালা কেটে চুরি করেন। এভাবে ১০-১৫ বছর ধরে গাইবান্ধার সাঘাটা, ফুলছড়িসহ দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় চুরি করত চক্রটি। চোরদের বাড়ি দেশের বিভিন্ন জেলায়। এই চক্রের নয়জনকে গত ছয় দিনে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেল চারটায় গাইবান্ধার পুলিশ সুপার (এসপি) মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম তাঁর কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং করে এসব কথা জানান। তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে চক্রের সদস্যরা জানান, ১০ লাখ টাকার মালামাল চুরি করলে সেই মালামাল তাঁরা মহাজনের কাছে ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। শুধু তা–ই নয়, চারজন চুরি করলেও এই টাকা ছয় ভাগ হতো। চারজন চার ভাগ এবং পিকআপ ভ্যানের মালিক ও মহাজন পান দুই ভাগ। এমনকি এই চক্রের সদস্য হতে মহাজনের হাতে প্রত্যেককে ৫-১০ হাজার টাকা করে ফি দিতে হয়েছে। মহাজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
গ্রেপ্তার হওয়া নয়জন হলেন টাঙ্গাইলের পাইক মুড়িল গ্রামের মো. আব্বাস, কালিহাতীর বারজানা মালতি গ্রামের আবদুল হাই, ঘাটাইলের ষাইটশৈলা গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমান ও ভুয়াপুর উপজেলার গোপালপুর গ্রামের ওয়ায়েস কুরুনী, সিরাজগঞ্জের গয়লা গ্রামের সাইফুল ইসলাম, চক কোবদাসপাড়া গ্রামের আবদুল কাদের, বেলকুচির চালা সাতরাস্তা গ্রামের আমিনুল ইসলাম ও শাহজাদপুর উপজেলার বেনুটিয়া গ্রামের রবিউল ইসলাম এবং নাটোরের সিংড়ার ছোট চৌগ্রামের মো. জোবায়ের।
এসপি তৌহিদুল ইসলাম আরও জানান, গত ৭ জুলাই ফুলছড়িতে দোকানে চুরি হয়। এ ঘটনায় মামলা হয়। এর সূত্র ধরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মইনুল হকের নেতৃত্বে দুই মাস ধরে বিভিন্ন জেলায় অভিযান চালানো হয়। প্রথমে আবদুল হাই ও মোস্তাফিজুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বাকিদের বিভিন্ন জেলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে তালা ভাঙার বড় কাটার, কয়েকটি মুঠোফোন ও দুটি পিকআপ ভ্যান জব্দ করা হয়।