চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার হুদাপাড়া সীমান্তে আবদুল গণি (৩৫) নামের এক বাংলাদেশিকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার সকালে সীমান্তের ৮৭ নম্বর প্রধান খুঁটির পাশে এ ঘটনা ঘটে। নিহত আবদুল গণির বাড়ি উপজেলার চাকুলিয়া গ্রামে।
নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসীর দাবি, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সহযোগিতায় ভারতীয় নাগরিকেরা আবদুল গণিকে হত্যা করেছেন।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ৬ এর পক্ষ থেকে হত্যার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করা হয়েছে। বিএসএফের সম্পৃক্ততার বিষয়টি তারা তদন্ত করে দেখবেন বলে জানিয়েছেন।
বিজিবি, পুলিশ ও স্থানীয় এলাকাবাসীর কাছ থেকে জানা গেছে, গতকাল সোমবার দিবাগত মধ্যরাতে আবদুল গণির নেতৃত্বে কয়েকজন গরু আনতে ভারতে যান। সীমান্তে ভারতীয় অংশে পেঁয়াজ খেতের মধ্য দিয়ে গরু আনাকে কেন্দ্র করে খেত মালিকদের সঙ্গে তাদের বাগ্বিতণ্ডা হয়। খেত মালিকেরা ক্ষতিপূরণ দাবি করলে তা দিতে অস্বীকৃতি জানানো হলে গণিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করা হয়। অবস্থা বেগতিক বুঝতে পেরে বাকিরা পালিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় গণিকে বাংলাদেশ অংশে ফেলে দেওয়া হয়।
নিহতের শ্যালক ইকবাল হোসেনের দাবি, তাঁর ভগ্নিপতি কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তিনি ভারতে কেন গিয়েছিলেন, তা তাদের জানা নেই।
নিহতের ভাই মনিরুজ্জামান বলেন, গতকাল সন্ধ্যার পর গণি বাড়ি থেকে বের হন। রাত আড়াইটার দিকে ভারত থেকে মুঠোফোনে অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তি জানান, বিএসএফের উপস্থিতিতে ভারতীয় নাগরিকেরা গণিকে নৃশংসভাবে কুপিয়েছেন। তাঁকে সীমান্তের কাছাকাছি বাংলাদেশের একটি মাঠে ফেলে রাখা হয়েছে। এরপর সেখান থেকে মুমূর্ষু অবস্থায় গণিকে উদ্ধার করে আজ সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সোহরাব হোসেন তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের চিকিৎসক সোহরাব হোসেন বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই মারা যান গণি। তাঁর বাম পায়ের গোড়ালির ওপর ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন আছে। দীর্ঘসময় ধরে রক্তক্ষরণ হওয়ায় তিনি মারা গেছেন।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর হোসেন লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে।
বিজিবি-৬-এর পরিচালক লে. কর্নেল মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে যে গরু পাচার করে আনার সময় ভারতীয় কৃষকদের খেত নষ্ট করলে তাঁরা গণিকে কোপায়। তবে বিএসএফের সম্পৃক্ততা নিয়ে অভিযোগের বিষয়টি অনুসন্ধান করা হচ্ছে। নিহত গণির নামে মাদক ও গরু পাচারের একাধিক মামলা আছে। বিজিবি দুই বছর আগে তাঁকে আটক করেছিল।