পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার ৫ ইউনিয়নে জেলে ও দুস্থদের ভিজিডি-ভিজিএফের ১৫০ মেট্রিক টন চাল নির্ধারিত সময়ে বিতরণ না করে সরকারি খাদ্যগুদামে মজুত করে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. হেমায়েদ উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, নির্ধারিত সময়ে জেলে ও দুস্থ নারীদের ভিজিডি ও ভিজিএফের ১৫০ দশমিক ৭৫ মেট্রিক টন চাল বিতরণ না করে গুদামে মজুত করে রাখা হয়। বুধবার দুপুরে জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল ইসলাম কালাইয়া খাদ্যগুদাম পরিদর্শনে যান। তখন বিষয়টি তাঁর নজরে আসে।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়া ৫ ইউপি চেয়ারম্যান হলেন নাজিরপুর ইউপির ইব্রাহিম ফারুক, কালাইয়া ইউপির এ কে এম ফয়সাল আহম্মেদ ওরফে মনির হোসেন মোল্লা ও তাঁর ছোট ভাই চন্দ্রদ্বীপ ইউপির চেয়ারম্যান এনামুল হক আলকাচ, কেশবপুর ইউপির চেয়ারম্যান মো. মহিউদ্দিন লাভলু এবং সূর্যমণি ইউপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন।
কালাইয়া খাদ্যগুদাম সূত্রে জানা গেছে, মজুত করা ১৫০ দশমিক ৭৫ মেট্রিক টন চালের মধ্যে ১০৫ মেট্রিক টন কেশবপুর ইউনিয়নের জেলেদের এবং ৩০ মেট্রিক টন চাল নাজিরপুর ইউনিয়নের জেলেদের। আর ৫ দশমিক ৮২ মেট্রিক টন ভিজিডির চাল সূর্যমণি ইউনিয়নের দুস্থ নারীদের জন্য বরাদ্দ ছিল। এ ছাড়া কালাইয়া ইউনিয়নের জন্য ভিজিডির চাল ছিল ৬ দশমিক ২৪ মেট্রিক টন ও চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের ভিজিডির চাল ছিল ৩ দশমিক ৬৯ মেট্রিক টন।
একজন জেলের ৪০ কেজি করে দুই মাসে পাওয়ার কথা ৮০ কেজি চাল। আর একজন দুস্থ নারীর এক মাসে ৩০ কেজি করে দুই মাসে ৬০ কেজি করে চাল পাওয়ার কথা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক জেলে জানান, গত সপ্তাহে তাঁদের চাল দেওয়া হয়েছে। তখন বলা হয়নি আরও চাল দেওয়া হবে। আর এই মহামারির সময় কোনো আয়-রোজগার নেই। এই সময়ে চাল না দিয়ে গুদামে রাখা অমানবিক। এক দুস্থ নারী জানান, তাঁর কোনো আয়ের উৎস নেই। ভিজিডি চালের ওপর নির্ভর করে জীবন ধারণ করতে হচ্ছে। যথাসময়ে চাল পেলে সুবিধা হয়।
কালাইয়া খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ দত্ত বলেন, ‘চালগুলো ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসের। নিয়মানুযায়ী নির্ধারিত সময়ে চালগুলো বিতরণ করার কথা। কিন্তু চেয়ারম্যানরা খাদ্যগুদাম থেকে ছাড়িয়ে না নিলে কী করার আছে।’
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) রাজিব বিশ্বাস বলেন, ফেব্রুয়ারি মাসের ডিও দেওয়া হয়েছে ওই মাসের শেষ সপ্তাহে। আর মার্চ মাসের ডিও দেওয়া হয়েছে সে মাসের মাঝামাঝি সময়ে। মোট কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিতরণের জন্য সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানদের ডিও দেওয়া হয়েছে।