চলন্ত বাসে ‘শ্লীলতাহানি’ থেকে বাঁচতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী লাফিয়ে পড়ে আহত হওয়ার ঘটনায় বাসচালককে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার মধ্যরাতে নগরের অক্সিজেন এলাকায় অভিযান চালিয়ে বাসচালক বিপ্লব দেবনাথকে আটক করা হয়।
বাসটিকে শনাক্ত করে চালককে আটক করা হয়েছে বলে জানান কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন। আজ শনিবার দুপুরে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বাসচালকের সহকারী ধর্ষণের উদ্দেশ্যে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ধরেছিলেন বলে অভিযোগ করেন ওই ছাত্রী। তবে এখনো বাসচালকের সহকারীকে আটক করা যায়নি। অভিযান চলছে। যত দ্রুত সম্ভব তাঁকে আটক করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাসায় ফেরার পথে গত বৃহস্পতিবার নগরের রেয়াজউদ্দিন বাজার এলাকায় ‘শ্লীলতাহানির’ এই ঘটনা ঘটে। গতকাল সন্ধ্যায় নগরের কোতোয়ালি থানায় ওই ছাত্রী বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। এতে বাসটির অজ্ঞাতপরিচয় চালক ও সহকারীকে আসামি করা হয়। ঘটনার সময় বাসে অন্য কোনো যাত্রী ছিল না।
ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর বাবা সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার মেয়ে সাহসিকতার সঙ্গে ঘটনাটি মোকাবিলা করেছে। সে মানসিকভাবে কিছুটা ভেঙে পড়েছে। মামলা হয়েছে। আশা করি, আমরা সুষ্ঠু বিচার পাব।’
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ছাত্রীটি জানান, বৃহস্পতিবার বেলা তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেট থেকে শহরগামী বাসে ওঠেন তিনি। রেয়াজউদ্দিন বাজার এলাকায় পৌঁছালে বাস থেকে সবাই নেমে যান। ছাত্রীটির যাওয়ার কথা নিউমার্কেট মোড়ে। কিন্তু সেখানে না থেমে বাসটি তার পথ পরিবর্তন করে স্টেশন রোডের দিকে যেতে শুরু করে। ওই সময় বাস থামাতে বললে চালকের সহকারী (হেলপার) তাঁর দিকে ধেয়ে এসে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ধরেন। ওই শিক্ষার্থী মুঠোফোন দিয়ে হেলপারকে মাথায় আঘাত করে চলন্ত বাস থেকে লাফিয়ে পড়ে আহত হন। এক রিকশাচালকের সহায়তায় বাসায় ফেরেন তিনি।
এর আগে ২০১৫ সালে ৫ মে চট্টগ্রামে চলন্ত বাসে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগে বাসচালক ও সহকারীকে পিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে পুলিশ কমিশনারের এ বিষয়ে কথা হয়েছে বলে জানান প্রক্টর মোহাম্মদ আলী আজগর চৌধুরী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হোক।