রাতে মা-বাবার পাশে ঘুমাচ্ছিল ১৭ দিনের নবজাতক। মাঝরাতে ঘুম ভাঙার পর থেকে সোহানা নামের ওই নবজাতককে আর খুঁজে পাচ্ছেন না বাবা–মা। তাঁদের ধারণা, গতকাল রোববার রাতের কোনো একসময় শিশুটিকে কেউ চুরি করেছেন। ঘটনাটি বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার খাউলিয়া ইউনিয়নের গাবতলা গ্রামের।
১৭ দিনের নবজাতক সোহানা আক্তার গাবতলা গ্রামের সুজন খান ও শান্তা আক্তার দম্পতির সন্তান। সুজন সাগরে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন।
পুলিশ জানায়, চুরি যাওয়া নবজাতক উদ্ধারে তাদের একাধিক দল মাঠে নেমেছে। টিনের চাল ও বেড়ার তিন কক্ষবিশিষ্ট বাড়ির একটি কক্ষে থাকতেন ওই দম্পতি। দুই পাশের অন্য দুটি কক্ষের একটিতে থাকতেন সুজনের বোন, বোনজামাই ও তাঁদের দুই বছরের মেয়ে এবং অন্যটিতে সুজনের বাবা-মা থাকেন।
শিশুটির মা বলেন, ‘রোববার রাতে খাওয়াদাওয়ার পর ঘরের আলো বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়ি আমরা। সোহানা আমাদের দুজনের মাঝখানে ছিল। রাতে কয়েকবার ওকে দুধও খাইয়েছি। দুইটার দিকে উঠে দেখি, মেয়ে নেই।’
খবর পেয়ে রাত থেকে পুলিশ নবজাতকের সন্ধানে অভিযান শুরু করে। সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন মোরেলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. দেলোয়ার হোসেন।
মোরেলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে রাত থেকে আমরা কাজ শুরু করেছি। বাবা-মায়ের পাশ থেকে নিখোঁজ নবজাতক সোহানাকে উদ্ধার করতে ভোর চারটা থেকেই আমরা অভিযান শুরু করেছি। আমরা ঘটনাস্থলে আছি। নবজাতককে খুঁজে পেতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে। তাঁদের ঘরের দরজা টিনের। লোহার আংটা দিয়ে লাগিয়ে রাতে ঘুমান তাঁরা।’
নবজাতকটির মা আমাদের বলেছেন, ‘রাতে ঘুমানোর সময় দরজা লাগানো হয়েছিল কি না, তা তিনি মনে করতে পারছেন না। নবজাতকের বাবা আগেও বিয়ে করেছিলেন। সেই সংসারে তাঁর দুই বছরের একটি মেয়ে আছে।’ এটি চুরি, নাকি কোনো ষড়যন্ত্র—তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে ওসি জানান।
২০১৯ সালের ১১ মার্চ একই উপজেলার বিশারীঘাটা গ্রামে বাবা-মায়ের পাশ থেকে দেড় মাস বয়সী একটি ছেলেশিশু চুরির ঘটনা ঘটে। সে সময় শিশুটিকে ফিরিয়ে দিতে পরিবারের কাছে লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। এই ঘটনায় জড়িত এক যুবককে আটকের পর ১৭ মার্চ একটি মৎস্য ঘেরের শৌচাগার থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।