ঘরেই টাকা তৈরির কারখানা বানিয়েছিলেন জীবন ও তাঁর দলের সদস্যরা। এই দলের দুজন আবার ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার। একটি খ্যাতনামা ফোন কোম্পানিতে নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কাজ করতেন তাঁদের একজন। আজ রোববার বেলা সোয়া ১১টার দিকে এক নারীসহ দলের চার সদস্যকে আটক করেছেন পুলিশের গোয়েন্দা (গুলশান) বিভাগ (ডিবি)।
পুলিশের গোয়েন্দা (গুলশান) বিভাগের উপকমিশনার মশিউর রহমান প্রথম আলোকে এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। দলনেতা জীবন এর আগেও জাল টাকা তৈরির দায়ে দুইবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। বেরিয়ে আবার জাল টাকা বানাতে শুরু করেছেন। জীবনকে বেশ কিছুদিন ধরে পুলিশ অনুসরণ করছিল। অবশেষে তিনি ধরা পড়েন। আটক ব্যক্তিদের কাছ থেকে জাল ৪৬ লাখ টাকা ও জাল টাকা তৈরির সামগ্রীও জব্দ করেছে পুলিশ। খাটের তলায়, জাজিমের নিচে, আলমারিতে কাপড়চোপড়ের ভেতর থেকে পুলিশ ওই জাল টাকা বের করে আনে।
আটক ব্যক্তিদের মধ্যে পিয়াস ও ইমাম হোসেন বরিশাল পলিটেকনিক থেকে নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ারিং ও কম্পিউটার সায়েন্স বিষয়ে ডিপ্লোমা করেছেন। ইমাম নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করতেন। অপর আসামি পিয়াস বরিশাল সরকারি পলিটেকনিক কলেজ থেকে পাওয়ারের ওপর ডিপ্লোমা করেন। বেশি টাকা পাওয়ার লোভে ভালো চাকরি ছেড়ে দিয়ে জাল টাকা তৈরির অবৈধ কাজে জুটে যান দুজনই।
পুলিশ জানায়, জাল টাকার কারবারিরা সহজে তাঁদের ডেরার ব্যাপারে মুখ খোলেন না। জীবনও খুলছিলেন না। কারখানাটির খোঁজে বসিলা চষে ফেলার পর তারা জানতে পারে, জীবনের কারখানা কামরাঙ্গীরচরে। পরে কামরাঙ্গীরচরের একটি বাসায় ঢুকে অন্যদের আটক করে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে দুটি ল্যাপটপ, দুটি প্রিন্টার, হিট মেশিন, বিভিন্ন ধরনের স্ক্রিন, ডাইস, জাল টাকার নিরাপত্তা সুতা, বিভিন্ন ধরনের কালি, আঠা এবং স্কেল কাটারসহ আরও অনেক সামগ্রী উদ্ধার হয়। পুলিশ বলছে, তাঁরা আরও দেড় কোটি জাল টাকা তৈরি করার মতো সরঞ্জাম মজুত করেছিলেন। তারা জানায়, এই দুই ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারের তৈরি জাল টাকার মান উন্নত। খালি চোখে দেখে বোঝারই উপায় নেই এগুলো জাল। ঈদ সামনে রেখে জাল টাকার উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছিলেন তাঁরা।
আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।