গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর এলাকায় গতকাল রোববার রাতে ডাকাত দলের সঙ্গে পুলিশের গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশের এক উপপরিদর্শক (এসআই) ও এক ডাকাত গুলিবিদ্ধ হন। মো. শাহ আলম নামের এক ব্যক্তির লুট হওয়া মালামাল উদ্ধারে অভিযানকালে এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ দুজন হলেন গাজীপুর সদর থানার এসআই মো. জহিরুল ইসলাম (৪৫) এবং ডাকাত দলের সদস্য মো. শরীফ (২৫)। শরীফের বাড়ি গাজীপুরের জয়দেবপুর থানার রুদ্রপুর এলাকায়। তাদের দুজনকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনার শিকার ঢাকার বাড্ডার সাতারকুল এলাকার বাসিন্দা মো. শাহ আলম বলেন, সম্প্রতি নেত্রকোনার দুর্গাপুর এলাকায় তাঁর মেয়ের বিয়ে হয়। গতকাল সন্ধ্যায় তিনি মেয়ের জন্য টিভি, ফ্রিজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় আসবাবপত্র একটি পিকআপভ্যানে করে ঢাকা থেকে নেত্রকোনার উদ্দেশে রওনা হন। রাত ৯টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে গাজীপুরের ন্যাশনাল পার্কের ৪নং গেট এলাকায় পেছন থেকে কে বা কারা পিকআপে ঢিল মারে। পিকআপটি থামালে কয়েকজন সশস্ত্র যুবক তাদের ঘিরে ফেলেন এবং গাড়িতে উঠে গাড়িটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন। পরে তাঁরা শাহ আলম, তাঁর শ্যালক নজরুল ইসলাম, গাড়ির চালক ও তাঁর সহকারীসহ ছয়জনকে জিম্মি করে তাদের পাশের বনে নিয়ে যান। সেখানে অস্ত্র ঠেকিয়ে তাদের সঙ্গে থাকা নগদ আট হাজার টাকা, মোবাইল ফোন ও একটি টিভি লুটে নেন। তাদের কাছ থেকে আরও ২০ হাজার টাকা বিকাশ হিসাবে নিয়ে তাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলেন। তাঁরা পিকআপটি নিয়ে সামনের দিয়ে এগিয়ে এলাকাবাসীকে বিষয়টি জানান। এলাকাবাসী পুলিশে খবর দেয়।
গাজীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন ভূইয়া বলেন, গতকাল রাত ১১টার দিকে পুলিশ রাজেন্দ্রপুর ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের ৪নং গেট এলাকায় বনে লুকিয়ে থাকা ডাকাত দলের ৭ থেকে ৮ জন সদস্যকে ঘিরে ফেলে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাত দলের সদস্যরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়ে। এ সময় এসঅই জহিরুল ডান হাতে ও কোমরের ডান পাশে আঘাত পান। ডাকাত দলের সদস্য শরীফ পায়ে গুলিবিদ্ধ হন। ডাকাত দলের অন্যরা পালিয়ে যান। এ সময় সেখান থেকে লুণ্ঠিত মালামাল ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
ওসির ভাষ্য, শরীফ পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন যে ওই রাতে তাঁরা একটি পিকআপভ্যানে ডাকাতি করেছেন। আবারও মহাসড়কের পাশে গাছের আড়ালে বসে গাড়িতে ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তাঁরা। ওসি জানান, শরীফের বিরুদ্ধে ডাকাতির একাধিক মামলা আছে। সম্প্রতি তিনি আদালত থেকে জামিনে ছাড়া আবারও ডাকাতি শুরু করেছেন। এ ঘটনায় মামলা হবে বলে জানান তিনি।
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজের আবাসিক চিকিৎসক মো. রফিকুল ইসলাম জানান, জহিরুল ও শরীফকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক নয়।