রাজশাহী মেডিকেল কলেজের একটি ছাত্রীনিবাসে আজ শনিবার ভোররাতে একজন বহিরাগত ঢুকে পড়েন। এতে ছাত্রীনিবাসের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ওই ব্যক্তিকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। তবে পুলিশ বলছে, ওই ব্যক্তি মানসিক ভারসাম্যহীন। আর কলেজ কর্তৃপক্ষ দায়িত্বে অবহেলার কারণে এক নিরাপত্তাকর্মীকে বরখাস্ত করেছে।
ছাত্রীনিবাসে ঢুকে পড়া ব্যক্তির নাম আবদুল হামিদ (৬০)। তাঁর বাড়ি রাজশাহী নগরের কাশিয়াডাঙ্গা মিঞাপাড়া এলাকায়।
বরখাস্ত হওয়া নিরাপত্তাকর্মীর নাম হাসিবুল হাসান। তিনি দাবি করেছেন, ওই সময় তিনি বাথরুমে ছিলেন। সেই সুযোগে লোকটি ভেতরে ঢুকেছেন।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজের পলিন ছাত্রীনিবাসে এ ঘটনা ঘটেছে। ছাত্রীনিবাসের একাধিক শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, সাহ্রি খাওয়ার পর তাঁরা ঘুমিয়ে পড়েন। এমন সময় নিরাপত্তাকর্মীর দায়িত্বে অবহেলার সুযোগে এক লোক ছাত্রীনিবাসের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে ঢুকে পড়েন। টের পেয়ে মেয়েরা চিৎকার শুরু করেন। তাঁরা তাদের কক্ষ থেকে বেরিয়ে লোকটিকে কক্ষের ভেতরে আটকে দেন। পরে ব্লকের অন্য মেয়েরা গিয়ে লোকটিকে ধরে ফেলেন। তাঁরা নিচের কলাপসিবল গেটও বন্ধ করে দেন। পরে ছাত্রীনিবাসের তত্ত্বাবধায়ককে খবর দেওয়া হলে তিনি বিষয়টি পুলিশকে জানান। এ সময় ছাত্রীনিবাসের দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তাকর্মীরা লোকটিকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন এবং তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য মেয়েদের অনুরোধ করেন।
মেয়েদের অভিযোগ, বহিরাগত লোকটিকে ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি মেয়েদের হুমকি দিচ্ছিলেন। এই ছাত্রীনিবাসে ন্যূনতম নিরাপত্তাও নেই। তাঁরা নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। একজন বহিরাগত কীভাবে সব নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙে ছাত্রীনিবাসের দোতলায় উঠে যেতে পারেন, এটা ভাবলেও ভয়ে তাঁদের গায়ে কাঁটা দিচ্ছে।
এ ব্যাপারে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ নওশাদ আলী বলেন, এ ঘটনার পর মেয়েরা তাঁর কাছে এসেছিলেন। তিনি ছাত্রীনিবাস পরিচালনা কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তাকর্মীকে বরখাস্ত করেছেন।
নগরের রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, যে লোকটি ওখানে ঢুকেছিলেন, তিনি আসলে মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন। তাঁর পরিবারের লোকজন তাঁকে তিন দিন ধরে খুঁজছিলেন। তাঁরা মানসিক হাসপাতালে ভর্তির কাগজপত্র নিয়ে এসেছিলেন। তাঁকে তিনবার সেখানে ভর্তি করা হয়েছিল। কোনো মামলা দেওয়া হবে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পাগলের নামে তো কোনো মামলা হয় না। তিনি ইতিমধ্যেই হাজতখানা ভেঙে ফেলার চেষ্টা করেছেন।’
থানায় আটক আবদুল হামিদ বলছেন, তাঁর জামা হারিয়ে গেছে, সেই জামা খুঁজতে তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। ১০০ মেয়ে তাঁকে ঘিরে ধরেছিলেন। মেয়েরা তাঁকে মেরেছেন।
বিকেলে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আবদুল হামিদ থানায় আটক ছিলেন।